ঢাকা, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫:
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে নয় মাসের জন্য পর্যটন নিষিদ্ধ করেছে সরকার। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত দ্বীপে পর্যটকদের প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ থাকবে।
পরিবেশ রক্ষায় কঠোর সিদ্ধান্ত
দীর্ঘদিন ধরে সেন্ট মার্টিনে অতিরিক্ত পর্যটন, প্লাস্টিক দূষণ, প্রবাল ধ্বংস ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতির বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছিলেন। সরকার জানিয়েছে, দ্বীপের নাজুক পরিবেশ রক্ষার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
একজন পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. মাহমুদ হাসান বলেন, “সেন্ট মার্টিন একটি সংবেদনশীল প্রবাল দ্বীপ। অতিরিক্ত পর্যটনের কারণে সামুদ্রিক জীবন ও প্রবাল মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। নিষেধাজ্ঞা দ্বীপকে পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করবে।”
অর্থনৈতিক সংকটে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা
সেন্ট মার্টিনের অর্থনীতি মূলত পর্যটন নির্ভর। নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ী, হোটেল মালিক, ট্যুর অপারেটর এবং নৌ-চালকদের আয়ের পথ সংকুচিত হয়ে পড়বে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহিম জানান, “আমাদের জীবিকা পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। যদি পর্যটক না আসে, তাহলে আমাদের পরিবার চলবে কীভাবে?”
বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপ ও জনমত
নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা একটি রিট পিটিশন দায়ের করেছেন, যার শুনানি ৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “এই নিষেধাজ্ঞা সাময়িক। দ্বীপের পরিবেশ রক্ষায় এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।”
পরিবেশ বনাম অর্থনীতি: সমাধান কী?
পর্যটন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দায়িত্বশীল পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে তোলাই একমাত্র সমাধান। দ্বীপের পরিবেশ রক্ষা ও স্থানীয় অর্থনীতির ভারসাম্য বজায় রাখতে পর্যটন নীতি ঢেলে সাজানো দরকার।
সরকারের সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে, সেন্ট মার্টিনের অর্থনীতি দীর্ঘমেয়াদে কীভাবে প্রভাবিত হবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে।