পাকিস্তানের আলোচিত মডেল ও অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের মৃত্যু ঘিরে করুণ ও রহস্যময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ৮ জুলাই, করাচির ডিফেন্স ফেজ ৬-এর নিজ ফ্ল্যাট থেকে তার পচাগলা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বয়স হয়েছিল মাত্র ৩৫ বছর। ময়নাতদন্ত শেষ হলেও মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে এখনো ফরেনসিক রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে কর্তৃপক্ষ। পুলিশ জানিয়েছে, মরদেহটি এতটাই পচে গিয়েছিল যে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে—প্রায় এক মাস আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
হুমাইরা দীর্ঘদিন ধরে একা থাকতেন এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন বলেই ধারণা তদন্তকারীদের। ২০১৮ সাল থেকে সেই ফ্ল্যাটে তিনি একাই থাকতেন এবং ২০২৪ সালের শুরু থেকে ভাড়াও দেননি। এসএসপি মাহজোর আলী জানান, তিনি নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করছিলেন। কিন্তু সবচেয়ে হৃদয়বিদারক বিষয় হলো, হুমাইরার পিতা মেয়ের মরদেহ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এমনকি তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, মেয়ের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই এবং করাচিতে আসার অনুরোধেও সাড়া দেননি। পরিবারের এমন উদাসীনতায় দেশজুড়ে নিন্দা ও বিস্ময় ছড়িয়ে পড়েছে।
২০১৩ সালে মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন হুমাইরা। পরে ২০২২ সালের জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘তামাশা’-তে অংশ নিয়ে আলোচনায় আসেন। তবে বিগত কয়েক বছর তিনি মিডিয়ার আলোচনার বাইরে ছিলেন এবং জনজীবন থেকেও নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন।
তার মৃত্যুর পর শোবিজ অঙ্গনে শুরু হয়েছে আত্মসমালোচনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার সহকর্মী ও ভক্তরা শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। অনেকেই বলছেন, ব্যক্তিগত জীবনের অব্যক্ত কষ্ট ও মানসিক সংকটকে অবহেলা না করে সমাজ ও শিল্পীমহলকে আরও সহানুভূতিশীল হতে হবে। হুমাইরার মর্মান্তিক পরিণতি শুধু একটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, বরং পুরো শোবিজ সমাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।