এস এম হাবিবুল হাসান,সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরায় সাংবাদিক পরিচয়ধারী ও দলিল লেখক সৈয়দ রফিকুল ইসলাম শাওনের বিরুদ্ধে পেশাগত দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, রাজনৈতিক সুবিধা গ্রহণ এবং ব্যক্তিগত জীবনে নৈতিক স্খলনের একাধিক অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীদের দাবি, তিনি সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের পদমর্যাদা ব্যবহার করে রেজিস্ট্রি অফিসে প্রভাব খাটিয়ে একটি দুর্নীতির সিন্ডিকেট পরিচালনা করছেন।
রেজিস্ট্রি অফিস কেন্দ্রিক অনিয়মের অভিযোগ
সূত্রে জানা যায়, শাওন সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখক হিসেবে কাজ করার সুযোগকে ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ দলিলের ভলিউম বইয়ের পৃষ্ঠা গায়েব করে জমির মালিকানা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রভাব বিস্তার করেন। অভিযোগে বলা হয়, এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, এসব অনিয়ম ও প্রভাব বিস্তারের জন্য শাওন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের ‘সাংগঠনিক সম্পাদক’ পরিচয় ব্যবহার করে থাকেন। এতে করে শুধু প্রেসক্লাবের ভাবমূর্তিই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, সাধারণ মানুষের মধ্যেও সাংবাদিকতা পেশা সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে।
রাজনৈতিক অবস্থান বদল ও বিতর্ক
শাওনের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে, তিনি সময় ও পরিস্থিতি বুঝে রাজনৈতিক পরিচয় বদলে নেন। এক সময় তিনি নিজেকে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবু আহমেদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচয় দিতেন, তবে রাজনৈতিক পরিবেশ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এখন নিজেকে বিএনপি-ঘনিষ্ঠ বলেও দাবি করছেন। এই দ্বিচারিতা ও সুযোগসন্ধানী মনোভাবের কারণে তিনি স্থানীয় রাজনৈতিক ও সাংবাদিক মহলে সমালোচিত।
ব্যক্তিগত জীবনে নৈতিক প্রশ্ন
শাওনের ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের রেখে পুনরায় এক স্কুল শিক্ষিকাকে বিয়ে করেন এবং পরে তার উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে ওঠেন। বেতন না পেলে স্ত্রীকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালাতেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। পরবর্তীতে স্ত্রী তাকে তালাক দেন। অভিযোগ রয়েছে, তালাকের পরও তিনি সাবেক স্ত্রীকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন, যার ফলে পুলিশ তাকে একবার গ্রেপ্তার করেছিল।
সাংবাদিক মহলের প্রতিক্রিয়া
সাতক্ষীরার মূলধারার সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, শাওনের এসব কর্মকাণ্ড সাংবাদিক সমাজের সম্মান ও বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অনেকে মনে করেন, সাংবাদিকতার আড়ালে তার এইসব বিতর্কিত কর্মকাণ্ড বন্ধ না হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে গণমাধ্যম নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব আরও বিস্তৃত হবে।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব থেকেও শিগগিরই শাওনের কর্মকাণ্ড তদন্ত করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।