নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুমিল্লার মুরাদনগরে নারীসহ তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার ভাঙ্গরা বাজার সংলগ্ন করইবাড়ি গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন—রোকসানা আক্তার রুবি (৪৮), তার ছেলে রাসেল (৩৮) এবং মেয়ে জোনাকি (৩২)। একই ঘটনায় রুবির আরেক মেয়ে রুমা গণপিটুনির শিকার হয়ে গুরুতর আহত হন। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, নিহত রুবিকে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী “মাদক সম্রাজ্ঞী” হিসেবে চিনত। তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও একাধিক অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। এলাকাবাসীর দাবি, একাধিকবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে ক্ষুব্ধ জনতা বৃহস্পতিবার সকালে তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে, ছেলে ও মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ভাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান। তিনি বলেন, “এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও ন্যক্কারজনক ঘটনা। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।”
ঘটনার পরপরই কুমিল্লার পুলিশ সুপার নজির আহম্মেদ খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কারা এই গণপিটুনিতে জড়িত ছিল, তা শনাক্তে ইতোমধ্যে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দায়ীদের শনাক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার।
পূর্ববর্তী ঘটনা:
এর আগে গত ২৬ জুন রাতে মুরাদনগরের আরেকটি গ্রামে ফজর আলী নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এক নারীকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের এই গণপিটুনির ঘটনা ঘটলো, যা এলাকায় উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছে।