সাম্প্রতিক সময়ে গায়ক কেকে, অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লা এবং সর্বশেষ অভিনেত্রী শেফালি জারিওয়ালার আকস্মিক মৃত্যুর পর ফের আলোচনায় এসেছে একটি পুরনো প্রশ্ন—কোভিড টিকার সঙ্গে কি আচমকা হৃদ্রোগ বা অকালমৃত্যুর কোনও সম্পর্ক রয়েছে?
এই বিতর্কে ঘি ঢেলেছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। রাজ্যের হাসন জেলায় গত এক মাসে ২০ জনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তিনি দাবি করেন, অতিমারিকালে তাড়াহুড়ো করে দেওয়া কোভিড টিকা হয়তো যুবক-যুবতীদের মৃত্যুর পেছনে কারণ হয়ে উঠেছে। তিনি টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে একটি কমিটি গঠনের ঘোষণাও দেন।
এই পরিস্থিতিতে আইসিএমআর (Indian Council of Medical Research) এবং এমস (AIIMS) যৌথভাবে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানিয়ে দিয়েছে, কোভিড টিকার সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্কদের হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোনও সরাসরি বা পরোক্ষ যোগ নেই।
২০২৩ সালের মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত, ১৯টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪৭টি হাসপাতাল থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। টার্গেট গ্রুপ ছিল ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সি শারীরিকভাবে সুস্থ নাগরিক, যারা ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের মার্চের মধ্যে আচমকা প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের টিকা নেওয়া ও না-নেওয়া—উভয় ক্ষেত্রেই মৃত্যুর কারণ ছিল মূলত হৃদ্পিণ্ডের দুর্বলতা, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, বা ধমনীতে রক্ত চলাচলের জটিলতা।
রিপোর্টে আরও উঠে এসেছে কিছু ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ—যেমন অতিরিক্ত মদ্যপান, ধূমপান, সারা রাত জেগে থাকা, যেগুলো দুর্বল হৃদ্পিণ্ডের ক্ষেত্রে আকস্মিক মৃত্যুর সম্ভাবনা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। পারিবারিক হৃদ্রোগের ইতিহাস এবং অতিরিক্ত ব্যায়াম বা মানসিক উত্তেজনাও ঝুঁকি বহন করে।
এক গবেষক স্পষ্ট করে বলেন,“কোভিড প্রতিষেধক একটি সুরক্ষা বর্ম হিসেবে কাজ করে। টিকার সঙ্গে হৃদ্রোগের কোনও সরাসরি সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।”
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে,“আচমকা মৃত্যু ও টিকার যোগসূত্র নিয়ে যেসব দাবি করা হচ্ছে, সেগুলি ভিত্তিহীন, বিভ্রান্তিকর এবং জনমনে অযথা ভয় ও সংশয় ছড়াতে পারে। এসব দাবির কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।”