স্টাফ রিপোর্টার:
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল আদালতে রিমান্ড শুনানিতে বলেছেন, “দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হয়নি। শেখ মুজিবও ক্ষমতার লোভ সামলাতে পারেননি। এক হাজার বছরেও নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, যদি না মৌলিক সংস্কার করা হয়।”
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে রিমান্ড শুনানির সময় তিনি এসব কথা বলেন। আদালত শুনানি শেষে তাকে ৩ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালতে হাবিবুলের বক্তব্য
শুনানির একপর্যায়ে আদালতের উদ্দেশে হাবিবুল বলেন,
“মাননীয় আদালত, আপনি ন্যায়বিচার করবেন। আমি স্বীকার করছি—দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। ১৯৭৩ সালেও মানুষকে পথে আটকে নমিনেশন দিতে দেওয়া হয়নি। শেখ মুজিবও ক্ষমতার লোভ সামলাতে পারেননি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই তুলনামূলক ভালো নির্বাচন হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন,
“এই দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় মৌলিক সংস্কার না হলে এক হাজার বছরেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।”
রিমান্ড ও মামলা প্রসঙ্গ
বিএনপি কর্তৃক দায়ের করা এক রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গত বুধবার রাজধানীর মগবাজার থেকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে “ভোট ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন” করেছেন।
এ মামলায় আরও আসামি করা হয়েছে—
- ২০১৪ সালের তৎকালীন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ
- ২০১৮ সালের তৎকালীন সিইসি এ কে এম নুরুল হুদা
- সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজীর আহমেদ ও বর্তমান পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
এর আগে গত ২৩ জুন সাবেক সিইসি এ কে এম নুরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
প্রেক্ষাপট
মামলার বাদী বিএনপির অভিযোগ, অভিযুক্ত সাবেক নির্বাচন কমিশনাররা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের বদলে “সরকারের ইচ্ছা বাস্তবায়নে” ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে একতরফা নির্বাচন করেছেন, যেখানে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে।