স্টাফ রিপোর্টার:
২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপন করায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের তদন্তে অভিযোগ ওঠে, শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে দাখিল করা হলফনামায় স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে ২১ দশমিক ৯১ একর জমি, দুই কোটির বেশি টাকার অস্থাবর সম্পদ এবং একটি আমদানিকৃত মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ির তথ্য গোপন করেছেন।
দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে তদন্তে বলা হয়, শেখ হাসিনার প্রকৃত স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ২৮ দশমিক ৪১ একর হলেও হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেছেন মাত্র ৬ দশমিক ৫০ একর।
তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে, ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য শেখ হাসিনা নির্বাচন কমিশনে ১৯ নভেম্বর হলফনামা জমা দেন। তদন্তে দেখা যায়, তিনি নিজ নামে ও যৌথ মালিকানায় থাকা জমির একটি বড় অংশ গোপন করেন।
অবশ্য নির্বাচন কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান ড. এ টি এম শামসুল হুদা ও দুদক চেয়ারম্যান হাসান মশহুদ চৌধুরী এই বিষয়ে অবহিত থাকলেও তা ধামাচাপা দেওয়া হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে।
সম্প্রতি দুদক নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি পাঠিয়ে ২০০৮ সালের হলফনামায় তথ্য গোপনের বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। এ ছাড়া ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের হলফনামাগুলিও নতুন করে তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, দুদকের চিঠি পাওয়া গেছে এবং কমিশনের আইন বিভাগ বিষয়টি পর্যালোচনা করছে।
দুদক সূত্র জানায়, শুল্কমুক্ত গাড়ি কেনার ক্ষেত্রেও জালিয়াতি হয়েছে বলে তারা সন্দেহ করছে এবং এ বিষয়ে আলাদাভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
আইন অনুযায়ী, হলফনামায় মিথ্যা তথ্য প্রদান করলে প্রার্থিতা বাতিলসহ ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি হতে পারেন অভিযুক্ত ব্যক্তি। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন এবং আদালত।
এদিকে আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।