নেইমার আবারও নিজের শেকড়ে ফিরেছেন। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে পুরনো ফর্মে ফেরার লক্ষ্যে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব সান্তোসের সঙ্গে চুক্তি বাড়িয়েছেন তিনি। ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সান্তোসেই থাকবেন এই তারকা ফরোয়ার্ড—এ তথ্য মঙ্গলবার ক্লাবের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
৩৩ বছর বয়সী নেইমার বলেন, “আমি একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আর সেটা নিয়েছি হৃদয় দিয়ে। সান্তোস শুধু আমার ক্লাব নয়, এটি আমার ঘর, আমার শেকড়, আমার ইতিহাস এবং আমার জীবন।”
নেইমারের পেশাদার ফুটবল জীবনের শুরু হয়েছিল সান্তোস থেকেই। এরপর তিনি ইউরোপে পাড়ি দেন, খেলেছেন বার্সেলোনায়, সেখান থেকে পিএসজি হয়ে পৌঁছান সৌদি আরবের ক্লাব আল-হিলালে। তবে সৌদি ক্লাবে চোট তার পিছু ছাড়েনি। প্রায় দেড় বছরে খেলেছেন মাত্র সাতটি ম্যাচ। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ফেরেন তার শুরুর ক্লাবে, সান্তোসে। প্রথমে স্বল্পমেয়াদি চুক্তি হলেও এখন সেটি বাড়িয়ে নেওয়া হলো আরও ছয় মাস।
তবে সান্তোসে ফিরে এসেও চোট তার সঙ্গী। এখন পর্যন্ত পাঁচ মাসে খেলেছেন ১২টি ম্যাচ, গোল করেছেন মাত্র তিনটি। সর্বশেষ ম্যাচে বোটাফোগোর বিপক্ষে হাত দিয়ে গোল করায় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন এবং মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
সান্তোসের অবস্থাও ভালো নয়। ব্রাজিলিয়ান লিগে এখন অবনমন অঞ্চলের এক ধাপ ওপরে অবস্থান করছে তারা—গোল ব্যবধানে টিকে রয়েছে ক্লাবটি। এই কঠিন সময়েই দলকে টেনে তুলতে চান নেইমার।
কিন্তু মাঠের বাইরে নেইমারকে নিয়ে সমালোচনা থেমে নেই। ইনজুরিতে থাকলেও রিও কার্নিভালের মতো আয়োজনে অংশ নিতে দেখা গেছে তাকে। এমনকি সাতজনের ‘কিংস লিগ’ প্রদর্শনী ম্যাচেও খেলতে দেখা গেছে এই সুপারস্টারকে।
তবুও জাতীয় দলের হয়ে এখনো বড় ভরসার নাম নেইমার। ব্রাজিলের জার্সিতে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৭৯ গোল করেছেন তিনি—দুই গোল এগিয়ে আছেন কিংবদন্তি পেলেকে ছাড়িয়ে। তবে বিশ্বকাপের ট্রফি এখনও অধরা। সেই সোনার হরিণ ধরা এখন তার জীবনের শেষ বড় লক্ষ্য।
চলতি বছরের মার্চে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দলে ডাক পেলেও হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে শেষ মুহূর্তে ছিটকে পড়েন তিনি। এরপর নতুন কোচ কার্লো আনচেলত্তি মে মাসে যখন নিজের প্রথম স্কোয়াড ঘোষণা করেন, তাতে জায়গা হয়নি নেইমারের। এখন সান্তোসে থেকে নিজের ছন্দ ফিরে পেতে চান তিনি, লক্ষ্য ২০২৬ বিশ্বকাপ। অনেকের ধারণা, সেটিই হতে পারে ব্রাজিলের জার্সিতে নেইমারের শেষ বিশ্বমঞ্চ। এখন সময়ই বলবে, চোট আর সমালোচনার গণ্ডি পেরিয়ে সেই মঞ্চে কতটা উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারেন এই ফুটবল জাদুকর।