আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গত এক সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যে যা ঘটেছে, তা নিছক কোনো যুদ্ধ নয়—বরং ছিল এক ভয়ংকর কৌশলগত প্রতিযোগিতা। ইরান, ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র—তিন পক্ষই নিজেদের ‘বিজয়ী’ দাবি করলেও বিশ্লেষকরা বলছেন, এ লড়াইয়ে কারো জয়ের গল্প পুরোপুরি সত্য নয়।
১৩ জুন ইসরায়েলের আকস্মিক হামলার মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই যুদ্ধ। লক্ষ্য ছিল ইরানের সামরিক ও পরমাণু স্থাপনা। ইরান পাল্টা জবাব দেয় কাতার ও ইরাকে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে। এভাবেই ১২ দিন ধরে চলতে থাকে হামলা-পাল্টা হামলা, যেখানে নিহত হয়েছে শতাধিক মানুষ, ধ্বংস হয়েছে বহু স্থাপনা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান মাথা নত না করেই টিকে থেকেছে। তাদের পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি, এমনকি ইউরেনিয়াম মজুদ কোথায় আছে—তা নিয়েও নিশ্চিত নয় পশ্চিমা গোয়েন্দারা। অন্যদিকে ইসরায়েল সামরিক দিক থেকে কিছু সফলতা পেলেও, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপে পড়ে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হতে বাধ্য হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ছিল অনেকটাই কৌশলী। শুরুতে মধ্যস্থতা, পরে গোপন সামরিক অভিযান ‘মিডনাইট হ্যামার’ এবং শেষে কূটনৈতিক চাপে যুদ্ধ থামানোর ডাক—সব মিলিয়ে তারা নিজেদের লাভের জায়গাটা ধরে রেখেছে।
এই যুদ্ধবিরতির পরও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—এই শান্তি কতটা টেকসই? ইরানের ক্ষয়ক্ষতি অনেক, ইসরায়েলের ব্যয় কয়েক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। কিন্তু কারোও মূল লক্ষ্য পুরোপুরি পূরণ হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই যুদ্ধ দেখিয়ে দিয়েছে—মধ্যপ্রাচ্যের পুরনো ভূরাজনৈতিক ভারসাম্য এখন আর নেই। নতুন নতুন শক্তি মাথা তুলছে, পুরনো জোটগুলো দুর্বল হয়ে পড়ছে। আর এ অঞ্চলের ভবিষ্যৎ এখন অনেকটাই নির্ভর করছে পরবর্তী কূটনৈতিক সিদ্ধান্তগুলোর ওপর।