আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সভাপতি স্বপন কুমার সাহা এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুনছুর রহমান শেখ।
আজ এক যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, “বাংলার রাজনীতিতে মওলানা ভাসানী ছিলেন গণমানুষের কণ্ঠস্বর ও সংগ্রামের বাতিঘর। তিনি আজীবন শোষিত-বঞ্চিত মানুষের পক্ষে লড়াই করেছেন, ছিলেন গণতন্ত্র, প্রগতিশীলতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতীক।”
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ১৯৪৮ সালে যখন কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন, তখনই ঢাকার পাবলিক লাইব্রেরিতে ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে ভাষা আন্দোলনের সূচনা করেন মওলানা ভাসানী। তিনি উপলব্ধি করেন, জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম প্রয়োজন। সেই ভাবনা থেকেই ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন টিকাটুলির রোজ গার্ডেনে প্রতিষ্ঠা করেন ‘আওয়ামী মুসলিম লীগ’। তিনিই ছিলেন এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি; সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শামসুল হক।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে মওলানা ভাসানী ও শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হকের নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তানে বিজয় অর্জিত হয়। এ সময় ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে দলের নাম রাখা হয় ‘আওয়ামী লীগ’। সেই নির্বাচনে স্বায়ত্তশাসনের দাবি অন্তর্ভুক্ত ছিল ২১ দফা নির্বাচনী ইশতেহারে।
১৯৫৫ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী যখন পূর্ব পাকিস্তানে ৯৮ শতাংশ স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে দাবি করেন, মওলানা ভাসানী তার প্রতিবাদ করেন এবং পশ্চিমা শাসকদের সঙ্গে আপসের নীতির সমালোচনা করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৫৭ সালের কাগমারী সম্মেলনে তিনি আওয়ামী লীগ ত্যাগের ইঙ্গিত দেন এবং একই বছরের ২৬ জুলাই রূপমহল সিনেমা হলে ‘ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)’ গঠন করেন।
নেতৃদ্বয় অভিযোগ করেন, “আওয়ামী লীগ গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে মওলানা ভাসানীর ঐতিহাসিক অবদানকে উপেক্ষা করেছে। অথচ তিনি ছিলেন স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রণেতা।”
তাঁরা বলেন, “মওলানা ভাসানীর সংগ্রামী ভূমিকা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা সকল দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের নৈতিক দায়িত্ব। তাঁর দেখানো পথই আজকের গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকারের সংগ্রামে দিকনির্দেশক।”
বিবৃতির শেষে তাঁরা বলেন, “আজ ২৩ জুন আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠা দিবসে আমরা তাঁর আদর্শ ও সংগ্রামের কথা গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি।”
জয় হোক গণতন্ত্রের, বিজয় হোক জনগণের।