রাজশাহীতে মওসুমি ফলের বাজারে ব্যাপক ধস নেমেছে, যা আম, ড্রাগন, পেয়ারা, লিচু ও কলা চাষি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে বড় ধরনের হতাশা ও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আম ও ড্রাগনের দাম না থাকার পাশাপাশি পেয়ারা ও লিচুতে পোকা এবং কলায় পচন ধরায় ফল বিক্রি ও সংরক্ষণে চরম সমস্যা দেখা দিয়েছে।
রাজশাহীর সর্ববৃহৎ আম বাজার পুঠিয়ার বানেশ^রে গত সোমবার হিমসাগর জাতের আমের দাম ১৪০০ থেকে ২১০০ টাকা মণ পর্যন্ত হলেও লক্ষনভোগ আম বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়। এ অবস্থায় অনেক আম ব্যবসায়ী গাছে পেকে যাওয়া আম পাড়ছেন না, আবার কেউ কেউ বাধ্য হয়ে পকে যাওয়া আম পেড়ে বাজারে তুলছেন।
রাজশাহীর নগরী ও উপজেলার বাজারেও আমের দাম প্রায় একই রকম, যেখানে খুচরা বিক্রি ২৫ থেকে ৪৫ টাকা কেজি পর্যন্ত। কোরবানীর ঈদে শহর ছেড়ে যাওয়া মানুষের কারণে আম বিক্রি ব্যাহত হয়েছে, ফলে ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের লোকসানের সম্মুখীন হয়েছেন।
বানেশ^র বাজারের আম ব্যবসায়ী আয়েস ও মুনসুর রহমান জানান, ঢাকার তুলনায় রাজশাহীতে আমের দাম বেশি হলেও এখনও বাজার ভালো হয়নি। অধিকাংশ ব্যবসায়ী ভয়ে গাছে আম পাড়তে পারছেন না।
লিচুর মওসুম প্রায় শেষ, তবে গরমের কারণে চাহিদা কম থাকায় দাম কিছুটা কমেছে। পেয়ারা গাছেও পচন ধরায় চাষিরা বাজারে ফল তোলার জন্য যানবাহনের সংকটে পড়েছেন।
ড্রাগন ফলের বাজারেও ব্যাপক দরপতন ঘটেছে। মে মাসে ৫০০-৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া ড্রাগন এখন পাইকারী ১১০ থেকে ১১৫ টাকা এবং খুচরা ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম না থাকার কারণে অনেক চাষি বাগান থেকে ড্রাগন তুলতে পারছেন না, যা আবার ফলের উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
ভাটাপাড়া এলাকার ড্রাগন চাষি রকি গোদাগাড়ী বলেন, “ড্রাগনের দাম না থাকার কারণে ফল তুলতে পারছি না। তুললেই পরবর্তী ফল আসতে দেরি হয়, তুলবেই না তো ক্ষতি হবে।”
সবমিলিয়ে মওসুমি ফলের বাজার ধসের ফলে রাজশাহীর চাষি ও ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন। তবে দাম বাড়ার আশায় তারা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছেন।