মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার মধ্যে পারমাণবিক হুমকির নতুন মাত্রা যোগ করলেন ইরানের অভিজাত ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)-এর শীর্ষ কর্মকর্তা ও জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সদস্য জেনারেল মোহসেন রেজায়ি। তিনি দাবি করেছেন, ইসরায়েল যদি ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে, তবে পাকিস্তানও পারমাণবিক হামলা চালাবে। রোববার ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন তিনি।
রেজায়ি বলেন, “পাকিস্তান আমাদের আশ্বস্ত করেছে—ইসরায়েল যদি পারমাণবিক বোমা ব্যবহার করে, তাহলে তারাও পারমাণবিক জবাব দেবে। পাকিস্তান এখন আমাদের পাশে রয়েছে এবং মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।” তিনি আরও জানান, ইরানের কাছে কিছু ‘গোপন সামরিক সক্ষমতা’ রয়েছে, যা এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
এই মন্তব্য এমন এক সময় এলো, যখন ইরান ও ইসরায়েল একে অপরকে লক্ষ্য করে টানা চার দিনেরও বেশি সময় ধরে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এই হামলা-পাল্টা হামলায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৪৮ জন। এর মধ্যে ইরানে নিহত হয়েছেন ২৩০ জন এবং ইসরায়েলে ১৮ জন।
তবে পাকিস্তান সরকার এখনো পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। অতীতে তারা ইরানের প্রতি কূটনৈতিক সহানুভূতি প্রকাশ করলেও, সরাসরি পারমাণবিক হামলার হুমকি দেওয়ার বিষয়ে কোনো সরকারি অবস্থান স্পষ্ট করেনি।
বিশ্ব পরমাণু নিরস্ত্রীকরণবিষয়ক সংগঠন ‘আন্তর্জাতিক ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার উইপনস’-এর তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল ও পাকিস্তান উভয়ই পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র। এমন অবস্থায় রেজায়ির এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কূটনৈতিক গুরুত্ব বহন করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, মোহসেন রেজায়ির বক্তব্য বাস্তবায়নের চেয়ে মূলত রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি এবং মুসলিম বিশ্বের সংহতির বার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই দেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়ার মতো পরাশক্তির নজর কেড়েছে, ফলে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত আরও বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।