ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনের জবাবে এবার মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে সরাসরি হামলার ইঙ্গিত দিয়েছে ইরান। দেশটির এক জ্যেষ্ঠ সামরিক সূত্রের বরাতে ফার্স নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ইসরায়েল যে যুদ্ধ শুরু করেছে, তা শুধু ইহুদি দখলদার অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ থাকবে না—এই আগ্রাসন ছড়িয়ে পড়বে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন মার্কিন সামরিক ঘাঁটি ও স্থাপনাতেও। সূত্রটি আরও জানায়, ইরান এই হামলাগুলোকে প্রতিশোধের অংশ হিসেবে দেখছে এবং পরবর্তী পর্যায়ে এর ব্যাপ্তি হবে আরও বিস্তৃত ও বেদনাদায়ক।
এই সতর্কবার্তা এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ইরান ‘ট্রু প্রমিজ ৩’ নামের অভিযানে ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক ও কৌশলগত স্থাপনায় একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং তারা যাতে আর কখনও এমন দুঃসাহস না দেখায়, সে জন্য ইরান সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে। তিনি স্পষ্ট করে দেন, দখলদার এই রাষ্ট্রকে অক্ষত থাকতে দেওয়া হবে না।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই ঘোষণায় শুধু ইসরায়েল নয়, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিগুলোও ইরানের টার্গেটে পরিণত হলো। রুশ বার্তা সংস্থা তাস জানায়, যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে সারা বিশ্বে এক হাজারেরও বেশি সামরিক ঘাঁটির নেটওয়ার্ক পরিচালনা করছে। মধ্যপ্রাচ্যের অন্তত ৯টি দেশে—বাহরাইন, জর্ডান, ইরাক, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান ও সিরিয়ায়—আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। এখানে মোতায়েন আছে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন সেনা।
ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের শীর্ষ উপদেষ্টা জেনারেল আহমেদ ওয়াহিদি বলেছেন, ইরানের প্রতিশোধমূলক অভিযান অব্যাহত থাকবে যতক্ষণ না আক্রমণকারীরা অনুতপ্ত হয় এবং ইরানের প্রতিরোধের শক্তি উপলব্ধি করে। এই যুদ্ধ যে সহজে থামবে না, তা ইরানের ভাষ্যেই পরিষ্কার হয়ে উঠছে। ফলে পুরো মধ্যপ্রাচ্য এখন আরও বিস্তৃত ও দীর্ঘমেয়াদী সংঘাতের মুখোমুখি।