ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ব্যাপক হামলার প্রেক্ষিতে বিশ্ববাজারে তেলের দাম শুক্রবার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারের দাম ৫.১ ডলার বা প্রায় ৭.৪ শতাংশ বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৭৪.৪৬ ডলারে পৌঁছেছে। একই সাথে, ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট অপরিশোধিত তেলের দামও ৫.১ ডলার বা ৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩.১৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ইসরায়েলি সরকার তাদের হামলা সম্পর্কে জানিয়েছে, তারা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা এবং সামরিক কমান্ডারদের লক্ষ্য করে একটি বড় অভিযান চালিয়েছে। এই হামলা তেহরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টাকে রোধ করার লক্ষ্যে নেওয়া একটি দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগের অংশ বলে দাবি করা হয়েছে।
ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা জানিয়েছে, নাতানজে অবস্থিত পারমাণবিক স্থাপনাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে তেজস্ক্রিয় বা রাসায়নিক দূষণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা হরমুজ প্রণালীর ওপর এই পরিস্থিতির প্রভাব সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হলেও, এ পর্যন্ত মূল জলপথটি তেমন কোনো প্রভাবের মুখে পড়েনি। হরমুজ প্রণালী বিশ্বের মোট তেলের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ পরিবহন করে, তাই এ অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়লে তেলের সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ রূপ নিতে পারলে এই প্রণালী বন্ধ হয়ে যেতে পারে অথবা এই অঞ্চলের তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিতে পারে, যার ফলে তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ১২০ থেকে ১৩০ ডলারের মধ্যে উঠে যেতে পারে। তবে বিশ্লেষক জানিভ শাহ মনে করেন, সামগ্রিক পরিস্থিতি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নেবে না এবং বর্তমান দাম বৃদ্ধিটি দীর্ঘস্থায়ী হবে না। ফলে, তারা আশাবাদী যে, তেলের বাজার এই চাপ থেকে দ্রুত সেরে উঠবে।