নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়ায় দুঃখ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। লন্ডন সফরের সময় ইউনূসের সঙ্গে আলোচনার আশায় থাকা টিউলিপ এক বিবৃতিতে জানান, এই সাক্ষাৎ না হওয়াটা তাঁর জন্য হতাশাজনক। তিনি মনে করেন, এই আলোচনার সুযোগ পেলে বাংলাদেশে ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে, তা অনেকটাই পরিষ্কার করা যেত।
জানা গেছে, ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরের সময় গত ৪ জুন টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেই চিঠিতে তিনি ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত নিয়ে আলোচনা করতে চান বলে জানান। চিঠিতে টিউলিপ তাঁর পারিবারিক পরিচয় স্পষ্ট করে বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি এবং শেখ রেহানার মেয়ে। তাই এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে পারস্পরিক বোঝাপড়ার পরিবেশ গড়ে তোলাই তাঁর উদ্দেশ্য ছিল।
ড. ইউনূসের পক্ষ থেকে সেই অনুরোধে কোনো ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় বিষয়টি দুই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, বর্তমানে তিনি একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল দায়িত্ব পালন করছেন এবং এই ধরনের রাজনৈতিক বা পারিবারিক আলাপ এড়িয়ে চলাই হয়তো তাঁর কৌশলগত সিদ্ধান্ত। বিশেষ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তাঁর ভূমিকা এখন আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ, তাই তিনি হয়তো কোনো ধরনের ভুল ব্যাখ্যা বা বিতর্ক এড়াতে সচেতনভাবেই এই সাক্ষাৎ এড়িয়ে গেছেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে নানা ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ ও জল্পনা-কল্পনা দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ এটিকে রাজনৈতিক দূরত্বের বহিঃপ্রকাশ বলছেন, আবার কেউ বলছেন এটি কূটনৈতিক সচেতনতার অংশ। যাই হোক, এই ঘটনায় ড. ইউনূস ও টিউলিপ সিদ্দিক দুজনের অবস্থান নিয়েই জনমনে কৌতূহল বাড়ছে।