বাংলা এফএম নিউজ ডেস্ক:
২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার এই ঘোষণার পর থেকেই দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি। মাত্র দশ মাস বাকি থাকায় প্রশ্ন উঠেছে— নির্বাচন কমিশন (ইসি) কি এই সময়ের মধ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে?
“আমরা প্রস্তুত”— বলছে ইসি
নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমান মাছউদ বিবিসি বাংলাকে বলেন,
“প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় যে সময়সীমা দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে প্রস্তুত আছে কমিশন। ইসি একটি বাস্তবায়নকারী সংস্থা, তাই প্রস্তুতি নিতেই হবে— আমরা নিচ্ছিও।”
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজ শুরু করেছে। দল নিবন্ধনের জন্য নোটিফিকেশনও দেওয়া হয়েছে।
কম সময়ের চ্যালেঞ্জ স্বীকার করলেও, নির্বাচন আয়োজন সম্ভব বলে আত্মবিশ্বাসী নির্বাচন কমিশন।
কী কী কাজ বাকি?
একটি জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের আগে ইসিকে যেসব কাজ সম্পন্ন করতে হয়, তার মধ্যে রয়েছে:
- ✅ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ
- ✅ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস
- ✅ নতুন রাজনৈতিক দল ও পর্যবেক্ষক সংস্থা নিবন্ধন
- ✅ নির্বাচনি সরঞ্জাম সংগ্রহ (ব্যালট বাক্স, কালি, স্ট্যাম্প প্যাড)
- ✅ নির্বাচনি কর্মকর্তা নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ
- ✅ রোডম্যাপ ও তফসিল ঘোষণা
নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন,
“আমরা আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছি। ব্যালট বাক্স ও অন্যান্য সরঞ্জামের জন্য টেন্ডারিং চলছে। বাজেট বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে।”
বিশেষজ্ঞদের মত
নির্বাচন বিশেষজ্ঞ আবদুল আলীম বলেন,
“এটা চ্যালেঞ্জিং হলেও অসম্ভব নয়। নির্বাচনপূর্ব সংলাপ ও সংস্কার প্রক্রিয়ার অনেকটাই ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এখন ইসিকে খুব ‘অ্যাকশন ওরিয়েন্টেড’ হতে হবে।”
তিনি আরও বলেন,
“সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে না থাকায় রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়বে— এটা ধরে নিয়েই প্রস্তুতি নিতে হবে।”
নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে হলে কেবল ইসি নয়, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী ও প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি। দলীয় প্রভাবমুক্ত প্রশাসন এবং আগাম নিরাপত্তা কৌশল ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু রাখা কঠিন হবে।
উপসংহার
স্বল্প সময়ে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হলেও, সেটা নির্ভর করছে ইসির প্রস্তুতি, রাজনৈতিক দলগুলোর আচরণ, এবং সরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগের ওপর। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা— নির্বাচন কমিশন কতটা দ্রুততা ও দক্ষতার সঙ্গে রোডম্যাপসহ বাকি প্রস্তুতি শেষ করতে পারে।