জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের আয়মাপুর মৌজায় একটি সরকারি পুকুর লিজ দেওয়ার নামে চাঁদাবাজি ও হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুল হান্নান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এক ভুক্তভোগী নারী ক্ষেতলাল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, আয়মাপুর মৌজার ৪৭৭ দাগের সরকারি পুকুরটি ২০২২ সালে স্থানীয় কনিয়াপাড়া মৎস্যজীবী খামার সমিতি তিন বছরের জন্য মৌখিকভাবে শারফুল ইসলামের কাছে লিজ দেয় এবং এক লাখ টাকা অগ্রিম নেয়। এরপর পরিবারটি ঋণ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করে।
তবে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুল হান্নান ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে ওই পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। চাঁদা না দেওয়ায় গত ২৮ মে সকাল ৮টার দিকে তারা দেশীয় অস্ত্রসহ পুকুরপাড়ে গিয়ে শারফুল ইসলাম ও তার স্ত্রীকে মারধর করে। এতে ওই নারী মাথা ও পায়ে গুরুতর আহত হন এবং শারফুল ইসলামও শারীরিকভাবে নিগৃহীত হন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলার পর হামলাকারীরা পুকুর থেকে প্রায় ৬০ মণ মাছ (আনুমানিক বাজারমূল্য ৪–৫ লাখ টাকা) জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। স্থানীয়রা চিৎকার শুনে ছুটে এলে তারা পালিয়ে যায়।
এই ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুল হান্নান (৪৩), আসলাম (৪৩), আনোয়ার (৪২), আঃ রউফ (৪৩), মাইনুর (৪০), মাবুদ আলী (৪৬), শাহীন (৪০), আঃ হাকিম (৪৫), আমিনুর (৩২), বক্কর (৪০), মোফাজ্জল (৩৫) এবং প্লাবন চৌধুরী (৪৬)।
ভুক্তভোগী নারী জানান, আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে এর আগেও চাঁদাবাজি ও ভাঙচুরের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে তার নাম রয়েছে। এছাড়াও চাঁদাবাজির একটি অডিও রেকর্ডিং প্রমাণস্বরূপ সংরক্ষিত রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে আব্দুল হান্নান বলেন, “আমি আমার পুকুরের মাছ তুলেছি, আমি সেই পুকুর ডিসিআর কেটে নিয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, “চাঁদাবাজি ও পুকুর থেকে মাছ লুটের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”