বিমান ছিনতাই ও মুক্তিযুদ্ধের সংযোগ:
৩০ জানুয়ারি ১৯৭১ সালে, ভারতের একটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট “গঙ্গা”, যা ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফকার এফ২৭ বিমান ছিল, সেটি দুই কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদী ছিনতাই করে। ছিনতাইকারীরা ছিলেন হাশিম কুরেশি ও তার ভাই আশরাফ কুরেশি, যারা আত্মঘাতী স্বাধীনতাকামী সংগঠন “আল ফতেহ”-এর সদস্য। তারা বিমানটি লাহোরে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে পাকিস্তান সরকার সেটি ধ্বংস করে ফেলে।
ভারতের প্রতিক্রিয়া:
এই ঘটনার পর, ভারত সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের বিমান যোগাযোগ নিষিদ্ধ করে। এর ফলে, পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) এবং পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এটি মুক্তিযুদ্ধের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সরাসরি সেনা ও রসদ পাঠানো কঠিন হয়ে পড়ে।
মুক্তিযুদ্ধে প্রভাব:
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে যখন পাকিস্তান সেনাবাহিনী “অপারেশন সার্চলাইট” শুরু করে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়, তখন ভারতের এই বিমান যোগাযোগ নিষেধাজ্ঞা পূর্ব পাকিস্তানকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। পশ্চিম পাকিস্তান সহজেই সৈন্য বা সামরিক সরঞ্জাম পাঠাতে পারছিল না, যা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি কৌশলগত সুবিধা তৈরি করেছিল।
এই ছিনতাইয়ের ঘটনা একদিকে কাশ্মীর সমস্যা জটিল করেছিল, অন্যদিকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।