শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের হালুহাটি গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে বাঁধ সংস্কার না হওয়ায় ভয়াবহ দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা। প্রতিবছর পাহাড়ি ঢল ও নদীর পানিতে সৃষ্টি হচ্ছে আকস্মিক বন্যা। এতে শুধু ফসল নয়, ভেঙে পড়ছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাও।
গত বছরের বন্যায় ভেঙে যায় গ্রামের প্রধান বাঁধটি। সাত মাস পার হলেও এখনো কোনো সংস্কার কাজ শুরু হয়নি। ফলে প্রতিটি বর্ষা যেন হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রামবাসী জানান, বাঁধটি ছিল শুধু একটি সুরক্ষা দেয়াল নয়, এটি ছিল যোগাযোগের একমাত্র পথও।
কৃষক মাইনুল ইসলাম বলেন,
“বাঁধ না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি ঢুকে পড়ে। গত বছর দেড় একর জমির ধান পানির নিচে চলে যায়, এবারও এক একর নষ্ট হয়েছে। এভাবে চললে আমরা আর চাষাবাদ করতে পারব না।”
স্থানীয় গৃহবধূ সাজিয়া বেগম জানান,
“বন্যা এলেই ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। ছেলেমেয়েদের নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। বাড়ির একাংশ পানিতে ডুবে গেছে বহুবার। বাইরে বের হতেও কষ্ট হয়।”
স্কুলছাত্র রিফাত জানায়,
“বাঁধই ছিল চলাচলের পথ। সেটা ভেঙে যাওয়ায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ। রাস্তায় হাঁটা যায় না, পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার উপক্রম।”
প্রাণী চিকিৎসক ফরিদুজ্জামান বলেন,
“শুধু কৃষি নয়, পুরো গ্রাম এখন হুমকির মুখে। নদীর প্রবল স্রোতে ভূমিক্ষয় হচ্ছে। শত শত একর জমির ফসল হারিয়ে মানুষ দিশেহারা।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বক্তব্য
এ বিষয়ে শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মো. আখিনুজ্জামান বলেন,
“বন্যা ও নদী ভাঙন প্রতিরোধে হালুহাটি এলাকার দীর্ঘদিনের দাবি বিবেচনায় নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। আশা করছি, দ্রুত বরাদ্দ মিললে কাজ শুরু হবে। আমরা বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।”
স্থানীয়দের অভিযোগ—প্রতিশ্রুতি বহুবার শোনা গেছে, কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। তারা অবিলম্বে বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরুর দাবি জানিয়েছেন।