দক্ষিণ আফ্রিকার একটি সোনার খনিতে প্রায় ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে থাকার পর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ২৬০ জন খনিশ্রমিককে। সিবানিয়ে-স্টিলওয়াটার নামের খনি পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের ৬০ কিলোমিটার পশ্চিমে ক্লুফ সোনা খনিতে একটি দুর্ঘটনার কারণে উত্তোলনযন্ত্র (হোইস্ট) বিকল হয়ে পড়ে, ফলে শ্রমিকরা খনির গভীরে আটকে পড়েন।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, উদ্ধারের প্রথম ধাপে রাত ১টা ৩০ মিনিটে ৭৯ জন শ্রমিককে ওপরে আনা হয়, পরে প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে বাকি শ্রমিকদেরও নিরাপদে উদ্ধার করা হয়।
এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়,
“ঘটনার সময় কোনো পর্যায়েই শ্রমিকদের জীবনের জন্য তাৎক্ষণিক ঝুঁকি ছিল না।”
ঘটনার পরপরই খনির বাইরে উদ্বিগ্ন স্বজনরা ভিড় করেন।
প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র হেনরিকা নিনহ্যাম বলেন,
“কর্মীরা আটকে পড়েননি, বরং নিরাপত্তাজনিত কারণে তাদের সাব-শ্যাফট স্টেশনে রাখা হয়েছিল।”
ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মাইনওয়ার্কার্স (NUM) জানিয়েছে, দুর্ঘটনাটি বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ঘটে এবং এতে তারা শ্রমিকদের দীর্ঘসময় খনির নিচে আটকে থাকার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সিবানিয়ে-স্টিলওয়াটার জানিয়েছে, প্রয়োজনে সব কর্মীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে এবং তাদের পরিবারদেরও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার খনি খাত: বিপুল শ্রমিক, ঝুঁকিপূর্ণ পেশা
দক্ষিণ আফ্রিকায় লাখ লাখ মানুষ খনি খাতে কর্মরত। দেশটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ প্লাটিনাম রপ্তানিকারক, পাশাপাশি সোনা, হীরক, কয়লা ও অন্যান্য খনিজেরও বিশাল সরবরাহকারী। তবে খনিতে দুর্ঘটনা দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রায়শই ঘটে থাকে।
দক্ষিণ আফ্রিকার মিনারেলস কাউন্সিল-এর তথ্যমতে, ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত খনি দুর্ঘটনায় ৪২ জন শ্রমিক মারা গেছেন, যেখানে ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ৫৫।
সিবানিয়ে-স্টিলওয়াটারের প্রধান নির্বাহী নিল ফ্রনেম্যান বলেন,
“যতক্ষণ না আমরা নিশ্চিত হচ্ছি যে সব প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, ততক্ষণ খনির কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা হবে না।”