পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিনটি প্রধান দায়িত্ব— সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন। প্রতিটি দায়িত্বই কঠিন, তবে শুধুমাত্র নির্বাচন আয়োজনের জন্য তাঁরা এই দায়িত্ব নেননি।
শুক্রবার (২৩ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বাংলাদেশ প্রাণিবিদ্যা সমিতির ২৪তম জাতীয় সম্মেলন ও বার্ষিক সাধারণ সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সংস্কার ও বিচারের অগ্রগতি
উপদেষ্টা জানান, সরকার সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট গ্রহণ করেছে এবং সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজনৈতিক ঐক্য গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে সব রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে। বিচার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। আগে একটি ট্রাইব্যুনাল থাকলেও এখন দুইটি ট্রাইব্যুনাল কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং আগামীকাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হবে।
নির্বাচনের নির্ধারিত সময়সীমা
তিনি বলেন, “আমরা একটা নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করেছি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়সীমার বাইরে একদিনও যাওয়ার সুযোগ নেই। সেই লক্ষ্যেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
দায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধকতা ও চাপের বিষয়
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “আমরা কোনো বাহ্যিক চাপে নেই। তবে আমাদের বিবেক ও দায়িত্ববোধই সবচেয়ে বড় চাপ। আমরা পারফর্ম করতে পারছি কিনা সেটাই মূল্যায়নের বিষয়।”
তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন পক্ষ নিজেদের দাবি আদায়ে রাস্তা বন্ধ করে জনজীবন অচল করে দিচ্ছে। অথচ অনেক বিষয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব। তিনি বলেন, “আমরা ক্ষমতা নিতে আসিনি, এসেছি জাতীয় দায়িত্ব পালন করতে। আর এই দায়িত্ব তখনই পালিত হবে, যখন সকলের সহযোগিতা থাকবে।”
দায়িত্বে থাকার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন
সবশেষে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “আমরা যদি বুঝি দায়িত্ব পালনে সক্ষম হচ্ছি না, তবে আমাদের দায়িত্বে থাকাটাও যৌক্তিক নয়। আমাদের নিজস্ব কাজ আছে, সেগুলোতে ফিরে যাওয়াই হবে তখন সঠিক সিদ্ধান্ত।”
উপদেষ্টার এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। অনেকেই এটিকে সরকারের জবাবদিহিতার ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।