বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলায় চীনের সহায়তায় একটি নতুন বিমানঘাঁটি নির্মাণের সম্ভাব্য উদ্যোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। ভারতের একটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, রংপুর বিভাগের এই প্রস্তাবিত ঘাঁটি ভারতের সীমান্ত থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, যা সিলিগুড়ি করিডোরের (চিকেন নেক) নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার একটি পরিত্যক্ত বিমানঘাঁটি পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা চলতি বছরের মার্চ মাসে আলোচনায় আসে। এরপর থেকেই ভারতীয় গোয়েন্দা ও প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলো ওই অঞ্চলে তৎপরতা বাড়িয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, চীনের একটি প্রতিনিধি দল সম্প্রতি লালমনিরহাটে এই সম্ভাব্য ঘাঁটি এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিমানঘাঁটি সামরিক ও বেসামরিক উভয় উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হতে পারে। বিশেষত, যুদ্ধবিমান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কিংবা প্রযুক্তি মোতায়েনের ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহৃত হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
যদিও এই ঘাঁটি নির্মাণ করছে বাংলাদেশ, তবে ভারত মনে করছে এর ব্যবহারে চীন কিংবা পাকিস্তানের জড়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতি ভারতের জন্য কৌশলগত দিক থেকে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ভারতের সিলিগুড়ি করিডোর একটি সংকীর্ণ ভূখণ্ড যা মূল ভূখণ্ডকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে যুক্ত করে রেখেছে। এই করিডোরের সুরক্ষা নিশ্চিতে ভারত এরইমধ্যে সেনা উপস্থিতি জোরদার করেছে। হাশিমারা বিমানঘাঁটি এই অঞ্চলের কাছাকাছি অবস্থিত, যেখানে রাফালে যুদ্ধবিমান মোতায়েন রয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে সরকারের পরিবর্তনের পর চীন-বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়েছে। সামরিক সহায়তা দিচ্ছে বেইজিং, যা ভারতীয় কূটনৈতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
তবে প্রস্তাবিত এই বিমানঘাঁটি সামরিকভাবে কতটা ব্যবহৃত হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনীয় কৌশল নির্ধারণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।