সিনিয়র প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। যদিও দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোসহ অনেকেই এ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে, তবুও অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ নেতারা নির্বাচন আয়োজনের এই সময়সূচিতেই অনড়।
সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রের মূল কাঠামোয় আমূল সংস্কারকে সামনে রেখে এগোচ্ছে এই সরকার। ইতোমধ্যেই গঠিত হয়েছে একাধিক বিশেষ কমিশন এবং একটি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, যারা ১৬৬টি সংস্কার সুপারিশ তৈরি করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠিয়েছে।
ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশ ১৬ বছর ধরে এক ধরনের রাজনৈতিক ভূমিকম্পে কাঁপছিল। আমরা চেষ্টা করছি ধ্বংসস্তূপ থেকে একটি ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার।”
তবে এ পথ সহজ হচ্ছে না। সংস্কার প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বড় বিতর্ক দেখা দিয়েছে নারী-অধিকার সংশ্লিষ্ট কমিশনের সুপারিশ ঘিরে। ইসলামি উত্তরাধিকার আইনে পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়ায় ইসলামপন্থি দলগুলো তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
অর্থনীতির দিক থেকেও মিশ্র পরিস্থিতি। ব্যাংক খাত ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হলেও প্রবৃদ্ধি এখনও দুর্বল। রাজপথে বিক্ষোভ অব্যাহত। জরিপে দেখা গেছে, সরকার পরিবর্তনের পরও প্রায় ৬০% নাগরিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি দেখছেন না।
একই সঙ্গে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলের নানা বিতর্ক, বিশেষ করে দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের মামলাগুলো নতুন করে মাথাচাড়া দিচ্ছে। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করেছে এবং তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবুও দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতা মোহাম্মদ আরাফাত বলছেন, “আওয়ামী লীগ জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় ছিল। আমাদের বিরুদ্ধে সহিংস জিহাদিরা ষড়যন্ত্র করেছে। আমরা গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাব।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ আশা প্রকাশ করেছেন, আগস্টের মধ্যেই একটি ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্ত হবে, যা নতুন নির্বাচনের পথ খুলে দেবে।