সখিপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের সখিপুরে গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত এক নারী প্রতারককে গ্রেফতার করেছে সখিপুর থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত নারীর নাম নুসরাত জাহান নুপুর, যিনি বরিশাল কোতোয়ালি থানার শাহ আলম মল্লিকের মেয়ে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকালে পৌর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়।
প্রতারণার কৌশল ও পারিবারিক সংকট
জানা গেছে, ২০০৩ সালে নুসরাত জাহান নুপুরের বিয়ে হয় টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার প্রবাসী আবুল কালামের সঙ্গে। দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার সুযোগে, তিনি পরিবার ও স্বামীর অনুমতি ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ও ব্যক্তি পর্যায় থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঋণ নেন।
ঋণদাতারা পাওনা টাকা ফেরত চাইতে শুরু করলে বিষয়টি প্রকাশ পায়। পরে নুপুর জানান, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে তিনি ঋণ নিয়েছেন। এ নিয়ে পরিবারের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। স্বামী ও স্বামীর পরিবার স্পষ্ট জানায়, তারা এই ঋণের বিষয়ে অবগত ছিলেন না এবং কোনো দায়ভারও নিতে রাজি নন।
নুপুরের দেবর মাজেদুল ইসলাম অভিযোগ করেন,
“তিনি আমার নামে ভুয়া চেক ব্যবহার করে ২০ ও ২৭ লাখ টাকার দুটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। আমরা সম্পূর্ণ নির্দোষ।”
মোট ২৬টি মামলা, এর মধ্যে দুটি মামলায় দণ্ডিত
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নুসরাত জাহান নুপুরের বিরুদ্ধে মোট ২৬টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৩২৪/২৪ ও ৪২/২৪ মামলায় তিনি আদালত থেকে দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্যান্য মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- ৬১২/২৪, ১০৩৬/২৪, ৩২৪/২৪, ৮৯১/২৪, ৬৯০/২৪, ১৪৫/২৩ (দা), ৯৩৭/২৪, ৮১৬/২৪, ৭৭০/২৪, ৭৬৯/২৪, ২৮৪/২৪, ১০৮/২৪, ৪২/২৪ ইত্যাদি।
ঋণদাতাদের অভিমত
সখিপুর বাজারের এক ব্যবসায়ী রবিদাস এবং আরেকজন নারী পাওনাদার বলেন,
“তিনি একাধিকবার টাকা নিয়েছেন। ফেরত চাইলে নানা অজুহাত দেখিয়ে ঘোরাতে থাকেন। বাধ্য হয়ে আমরা মামলা করেছি।”
স্বামীর প্রতিক্রিয়া
নুসরাতের স্বামী আবুল কালাম, প্রবাস থেকে ফোনে বলেন:
“ঋণের বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। দেশে ফেরার পর বিষয়টি জানতে পেরে হতবাক হই। আমি এই ঋণের দায়ভার নেব না। আইন তার নিজস্ব পথেই চলবে।”
পুলিশের বক্তব্য
সখিপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোশারফ হোসেন জানান,
“গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় তাকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।”