সত্যজিৎ দাস (মৌলভীবাজার প্রতিনিধি):
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের মুরইছড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) নারী ও শিশুসহ ১৪ জন বাংলাদেশিকে বাংলাদেশে পুশইন করেছে। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ১০টার দিকে সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে,পুশইন হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ, ৬ জন নারী ও ৪ জন শিশু রয়েছে। তারা সবাই কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। জীবিকার সন্ধানে সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন তারা। ভারতে তারা রাজস্থানের একটি ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন। সেখানকার পুলিশ তাদের আটক করে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। পরে বিএসএফ কোনো প্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই তাদের সীমান্ত পার করে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে ঠেলে দেয়।
ঘটনার পর বিজিবি ৪৬ ব্যাটালিয়নের একটি টহল দল দ্রুত তাদের আটক করে। বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়,আটককৃতরা অবৈধ অনুপ্রবেশের বিষয়টি স্বীকার করেছেন এবং তাদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
বিজিবি ৪৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম জাকারিয়া জানান,“আটক ব্যক্তিরা বাংলাদেশের নাগরিক বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাদের কুলাউড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম আপছার বলেন,“বিজিবি থেকে তাদের থানায় হস্তান্তর করার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন,এ ধরনের আচরণ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কোনো দেশের নাগরিককে এভাবে জোরপূর্বক নিজ দেশে ফেরত পাঠানো আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।
এই ঘটনায় সীমান্তে মানবিক সংকটের পাশাপাশি কূটনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকারকর্মীরা। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা যখন এই প্রক্রিয়ার শিকার হন,তখন তা আরও বেশি করুণ বাস্তবতার দিকে ইঙ্গিত করে।
সংশ্লিষ্টদের মতে,পুশইন বন্ধে বাংলাদেশ সরকারের উচিত ভারতের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক আলোচনা জোরদার করা। সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় সম্মানজনক ও মানবিক নীতিমালার ভিত্তিতে সমাধানে পৌঁছানো সময়ের দাবি।