মারুফ সরকার, প্রতিবেদক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ও স্যার এ.এফ. রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ড নিয়ে গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সহ-সভাপতি তৌহিদুর রহমান আউয়াল।
তিনি বলেন, “আজকের এই দিনটি আমাদের জন্য একটি শোকের দিন। আজ আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। যখন আনন্দ আসে, তখন সবাই ক্রেডিট নিতে চায়; কিন্তু যখন বিসর্জনের সময় আসে, তখন কেউ দায়িত্ব নেয় না।”
ভিসি ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ
ছাত্রদল নেতা আউয়াল বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাম্প্রতিক আচরণে ছাত্রসমাজ হতাশ। একজন স্বার্থপর ভিসি শুধুমাত্র নিজের পদ আঁকড়ে ধরার জন্য যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন, তা এক শিক্ষাপ্রশাসকের কাছ থেকে কল্পনাও করা যায় না।”
তিনি দাবি করেন, নিহত সাম্য ছিলেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ১৮-১৯ সেশনের মেধাবী শিক্ষার্থী এবং ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে সাহসিক ভূমিকা রাখা একজন ‘হিরো’।
“সাম্য হত্যাকাণ্ড নৈরাজ্যের প্রতিচ্ছবি”
আউয়াল বলেন, “গতকাল রাত ১২টার দিকে দুর্বৃত্তরা তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। সাম্যর মৃত্যু এই দেশে ছড়িয়ে পড়া বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যের প্রতিফলন। দিনকে দিন বারবার ছাত্রদলকেই টার্গেট করা হচ্ছে। এসব হামলার পেছনে রয়েছে ফ্যাসিবাদী ও নব-ফ্যাসিবাদী মানসিকতা।”
তিনি দাবি করেন, “আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রকৃত হত্যাকারী ও হুকুমদাতাকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও মূল নির্দেশদাতারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। আমরা শুধু খুনিদের নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও প্রক্টরের পদত্যাগও চাই।”
“ছাত্রদলই আজ ফলজবৃক্ষ, তাই ঢিল ছোড়া হচ্ছে”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন একটি সময় পার করছি যেখানে প্রতিনিয়ত বলিদান দিচ্ছে ছাত্রদল। গত ১৬ বছরে আমাদের অসংখ্য ত্যাগের ইতিহাস রয়েছে। তবে এই বলিদান যেন আর না হয়, সেজন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।”
রাজনৈতিক বাস্তবতা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “মানুষ কেওড়াগাছে ঢিল মারে না, ঢিল মারে আমগাছে। আজ ছাত্রদল সেই ফলজবৃক্ষ হয়ে উঠেছে, যার দিকে বারবার ঢিল ছোড়া হচ্ছে।”
সরকারের উদ্দেশে প্রশ্ন
আউয়াল সরকারের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, “একজন শিক্ষার্থী যদি বিদেশি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এভাবে খুন হতো, তাহলে কি সরকার এতটাই নির্লিপ্ত থাকত?”
তিনি বলেন, “যারা আজকের এই বলিদানকে অবহেলা করছেন, তারা মানবিকতার জায়গা থেকে কখনোই গ্রহণযোগ্য হবেন না।”
বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে
আউয়াল স্পষ্ট করে দেন, “আমাদের প্রতিবাদের ভাষা থেমে থাকবে না। সাম্য হত্যার বিচার চাই এবং যারা এই হত্যার নির্দেশদাতা—তাদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানাই।”