রিপন মারমা, রাঙামাটি:
আত্মনির্ভরশীলতার পথ সহজ নয়—তবুও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সেটাকেই সম্ভব করে তুলেছেন রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের বড়খোলা গ্রামের বাসিন্দা সাজাই উ মারমা। ছাগল ও ব্রয়লার জাতের মুরগির খামার গড়ে তিনি হয়েছেন সফল উদ্যোক্তা।
চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন সাজাই উ মারমা। তবে চাকরির বাঁধাধরা জীবনে কখনও মন বসেনি তার। ২০১২ সালে চাকরি ছেড়ে নিজের গ্রামে ফিরে শুরু করেন খামার। মাত্র একটি ছাগলের বাচ্চা দিয়ে যাত্রা শুরু। ধীরে ধীরে ছাগলের সংখ্যা বাড়িয়ে বর্তমানে তার খামারে ১৯টি ছাগল রয়েছে। বছরে তিনি ছাগল বিক্রি করে আয় করছেন ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা।

খামারে রয়েছে ব্রয়লার মুরগি, দেশি মুরগি, রাজ হাঁস, দেশি হাঁস এবং উন্নত জাতের চারটি গরুও। সব মিলিয়ে মাসে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় করছেন তিনি। খামারে একজন স্থায়ী কর্মচারী ছাড়াও দৈনিক ভিত্তিতে আরও কয়েকজন কাজ করেন।
সাজাই উ মারমা বলেন,
“চট্টগ্রামে চাকরি করেছি আট বছর। অন্যের অধীনে চাকরি করা ভালো লাগতো না। তাই নিজের স্বাধীন পেশা বেছে নিয়েছি। দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে পেরে গর্ব বোধ করি।”
তার খামার দেখতে এবং পরামর্শ নিতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন অনেক বেকার যুবক। অনেকে তার কাছ থেকে ছাগল, গরু, হাঁস-মুরগিও কিনে নিচ্ছেন।
কাপ্তাই প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কৃষিবিদ এনামুল হক হাজারী বলেন,
“সাজাই উ মারমা ১টি ছাগল দিয়ে খামার শুরু করেছিলেন, আজ তিনি একজন সফল খামারি। আমরা তাকে নিয়মিত পরামর্শ ও ভ্যাকসিনেশন সেবা দিয়ে সহায়তা করছি। তিনি আমাদের উপজেলায় অন্যদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা।”
এই কর্মকর্তা আরও বলেন,
“বেকার যুবকদের উচিত চাকরির জন্য না ঘুরে উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করা। সাজাই উ মারমার মতো উদ্যোগই হতে পারে আত্মনির্ভরতার পথ।”