বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপার্সন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মীনি ডাঃ জোবাইদা রহমান এবং পুত্রবধু শর্মিলা রহমান যেই ঐতিহাসিক দিনে প্রত্যাবর্তন করলে ঠিক সেই দিনেই বাংলাদেশে ফিরলেন নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) এর এমপি পদপ্রার্থী নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার আবু হেনা মোস্তফা কামাল রঞ্জু। এ সময় বিমানবন্দরে বিএনপিসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা’র নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল তাকে স্বাগত জানান।
এসময় তিনি বলেন, আমার মরহুম পিতা এম মোজাম্মেল হক যেভাবে গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রামের সাধারণ মানুষের পাশে ছিলেন ঠিক সেভাবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ১৯ দফা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা গণমানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি। এলাকাবাসীর সকল দুঃসময়ে পাশে ছিলাম, আগামীতেও থাকবো। তিনি আরো বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছি, তবুও আপোষ করিনি। ভবিষ্যতেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে ঐতিহাসিক মহা-পরিকল্পনা করেছেন সেই পরিকল্পনাকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দেয়া আমার কাজ।
গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রামের উন্নয়নে ব্যারিস্টার আবু হেনা মোস্তফা কামাল রঞ্জুর যুগান্তকারী পরিকল্পনা:
নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রত্যয়ে কাজ করছেন ব্যারিস্টার আবু হেনা মোস্তফা কামাল রঞ্জু। প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য মোজাম্মেল হকের জ্যেষ্ঠ পুত্র হিসেবে তিনি তাঁর বাবার উন্নয়ন কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে চান। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা কর্মসূচির আলোকে তিনি গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রামের জন্য বাস্তবসম্মত, টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো কর্মসংস্থান ও সুযোগের সুষম বণ্টনের মাধ্যমে এলাকাটিকে একটি উন্নত, শিক্ষিত ও স্বনির্ভর অঞ্চলে পরিণত করা। পরিকল্পনাটি ছয়টি প্রধান স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে নাটোর-৪ নির্বাচনী এলাকায় শিক্ষার হার ৫৬%, যা জাতীয় গড়ের (৭৫%) তুলনায় অনেক কম।
এই পরিস্থিতি উত্তরণে ব্যারিস্টার রঞ্জু কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা করেছেন- টেকনিক্যাল ও ভোকেশনাল শিক্ষা সম্প্রসারণ- তিনি এ অঞ্চলে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন, যেখানে ফ্রিল্যান্সিং ডিজিটাল মার্কেটিং অটোমোবাইল, কৃষি প্রযুক্তি, ই- কমার্স ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা উন্নয়ন কোর্স থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাব সেন্টার স্থাপন- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি সরকারি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে রূপান্তর করা। যাতে উচ্চ শিক্ষার জন্য তরুণদের ঢাকায় যেতে না হয়। নারী উন্নয়ন তহবিল- অনার্স মাস্টার্স পর্যায়ের ছাত্রীদের জন্য বিনা সুদে শিক্ষা ঋণ এবং প্রতিমাসে উপবৃত্তি নিশ্চিত করা। প্রতিটি স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব ও ডিজিটাল স্মার্ট ক্লাশরুম স্থাপন করা।
উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজার সুবিধা- কৃষি পন্যর ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরন।এ অঞ্চলে কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় সরকারি কৃষিক্রয় কেন্দ্র স্থাপন, যাতে কৃষকরা ন্যায্য মূল্যে ফসল বিক্রি করতে পারে। কোল্ডস্টোরেজ ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প- বাজারজাত করনের অভাবে প্রতি বছর ৩০% কৃষি পন্য নষ্ট হয়।দুই উপজেলায় দুটি আধুনিক কোল্ডস্ট্রোরেজ নির্মাণ করা,যেখানে সবজি, মাছ ও দুগ্ধজাত পন্য সংরক্ষণ করা যাবে।
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা উন্নয়ন- এ অঞ্চলে প্রতিবছর প্রায় ১০ হাজার উদ্যোক্তা তৈরি হতে পারে।যদি সরকার সহযোগিতা করে একটি পরিবারের একটি গল্প মডেল ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপনে সহায়তা করা হবে।
আধুনিক মৎস্যখাত- এ অঞ্চল দুইশত কোটি টাকার মৎস্য উৎপাদন করে। যা আরো ৫০% বাড়ানো সম্ভব। একটি আধুনিক ফিস প্রসেসিং ইউনিট স্থাপন করে যাতে মৎস্য রপ্তানির সুযোগ বাড়ে।
উন্নত সড়ক ও পরিবহন ব্যবস্থা, সড়ক সম্প্রসারণ- বর্তমানে অঞ্চলে ৭৫% গ্রামীণ রাস্তা।এখনো কাঁচা বা আধাপাকা, আরো ১০০ কি,মি, নতুন রাস্তা নির্মান করে প্রধান সড়ক গুলো দুই লেনে সম্প্রসারণ করা হবে। নতুন রেল স্টেশন ও আধুনিক বাস টার্মিনাল স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। যাতে ঢাকা- রাজশাহী রুটে দ্রুত সংযোগ পাওয়া যায়।
সেতু ও কালভাট- বিগত দশকে ৩৫% নদী পারাপার বাধাগ্রস্ত হয়েছে সেতুর অভাবে। আরো ২০ টি সেতু ও কালভাট নির্মানের পরিকল্পনা রয়েছে।
দুই উপজেলায় ২০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতাল স্থাপন করা, যেখানে সার্জরি, প্রসূতি, শিশু ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ থাকবে। স্বল্প মূল্যে ঔষধ ও অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা,গ্রামের সাধারণ মানুষের জন্য বিনামূল্য জরুরী স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা।
নতুন শিল্পনগরী গঠনে বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন- এ অঞ্চলে ১০০ একর জায়গার উপর একটি নতুন শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা। যেখানে গার্মেন্টস, চামড়া, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও আইটি শিল্প স্থাপন করা হবে।
ফ্রিল্যান্সিং ও আইটি পার্ক- এ অঞ্চলে নতুন আইটি পার্ক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হবে। যেখানে তরুনদের ফ্রিল্যান্সিং সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট ও ডিজিটাল মার্কেটিং প্রশিক্ষণ করানো হবে। ১০ হাজার তরুণ – তরুণীর কর্মসংস্থান উদ্যোক্তার সহায়তা ও শিল্পায়নের মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরে ১০ হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
জনগণের নিরাপত্তা ও ন্যায্যতা অবৈধ দখল, দুর্নীতি ও সন্ত্রাস দমন- এ অঞ্চলে দুর্নীতি ও ভূমি দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
নারী ও শিশু সুরক্ষা- প্রতিটি উপজেলায় নারীর নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হবে। এবং ২৪/৭ হেল্প লাইন চালু করা হবে।
এই পরিকল্পনাগুলে বাসতবায়ন হলে নাটোর- (গুরুদাসপুর- বড়াইগ্রাম) শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও অবকাঠামোর এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। আমি জনগণের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো ইনশাআল্লাহ। আপনাদের ভোট ও সমর্থন পেলে প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবে রূপান্তর করে এই নির্বাচনী অঞ্চলকে উন্নয়নের অনন্য মডেলে পরিনত করার ইচ্ছা রয়েছে বলেন ব্যারিস্টার রঞ্জু।