মাল্টার ‘গোল্ডেন পাসপোর্ট’ স্কিম অবৈধ ঘোষণা করল ইউরোপীয় বিচার আদালত
লুক্সেমবার্গ, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ — বিনিয়োগের বিনিময়ে নাগরিকত্ব প্রদানকারী মাল্টার আলোচিত ‘গোল্ডেন পাসপোর্ট’ কর্মসূচিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইন পরিপন্থী ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় বিচার আদালত (ইসিজে)। এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের কর্মীরা ও নাগরিক সমাজ।
মাল্টার নাগরিক সংগঠন রিপাবলিকার নির্বাহী কর্মকর্তা মানুয়েল ডেলিয়া বলেন, ‘‘আমি রায় শুনে চিৎকার করে উঠেছিলাম। আমি তো খারাপ খবরের জন্য প্রস্তুত ছিলাম।’’
দীর্ঘদিন ধরেই মাল্টার এই স্কিমের বিরোধিতা করে আসছিলেন ডেলিয়া ও তার সহকর্মীরা। তাদের মতে, এই ধরনের কর্মসূচি নাগরিকত্বকে পণ্যে পরিণত করে, যার ফলে ন্যায়বিচার, নিরাপত্তা ও ঐক্য ক্ষুণ্ন হয়।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, কেবল অর্থ বিনিয়োগের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়া সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বন্ধন গঠনে বাধা সৃষ্টি করে।
মাল্টা দাবি করে, এই কর্মসূচির মাধ্যমে দেশটি প্রায় ১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রাজস্ব অর্জন করেছে এবং তা দাতব্য কাজেও ব্যবহৃত হয়েছে। তবে আদালতের রায়ের পরে এই কর্মসূচির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
দাফনে কারুয়ানা গালিজিয়া ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, মাল্টার পাসপোর্টপ্রাপ্ত ৯০% ব্যক্তি চীনা নাগরিক, যাদের অনেকে দেশটিতে বসবাসই করেন না।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের নীতি বিশ্লেষক আনা টেরন বলেন, ‘‘এই রায়ের যুক্তিগুলো ভবিষ্যতে ‘গোল্ডেন ভিসা’ স্কিম বন্ধের পথও তৈরি করতে পারে।’’
ইউরোপীয় কমিশনের মুখপাত্র মার্কুস লেমার্ট এই ধরনের কর্মসূচিকে অর্থপাচার, কর ফাঁকি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করেছেন।
যদিও মাল্টা সরকারের পক্ষ থেকে কর্মসূচি বন্ধ করার কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা এখনো আসেনি, তবে রায় অনুযায়ী নাগরিকত্ব নীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।