চলতি বছরের এপ্রিল মাসে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স প্রবাহে উল্লেখযোগ্য উল্লম্ফন দেখা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২৭৫ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে) যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩৩ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা।
গড় হিসেব অনুযায়ী, এপ্রিলজুড়ে প্রতিদিন দেশে এসেছে ৯ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। গত বছরের একই সময়ে এ পরিমাণ ছিল ২০৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ৩৪.৬০ শতাংশ, যা অর্থনীতিতে একটি বড়সড় ইতিবাচক সাড়া হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।
৩০ এপ্রিল একদিনেই প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ১৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এমন উচ্চ প্রবাহ চলতি অর্থবছরের (জুলাই-এপ্রিল) সার্বিক চিত্রেও প্রতিফলিত হয়েছে। এই ১০ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৪৫৩ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮.৩০ শতাংশ বেশি।
প্রসঙ্গত, দেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে চলতি বছরের মার্চ মাসে—৩২৮ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এর টাকার অঙ্কে পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৪০ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা।
এর আগে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে, যার পরিমাণ ছিল প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার।
২০২৪ সালের পুরো বছরজুড়েই দেশে রেমিট্যান্সের প্রবাহ ছিল চাঙ্গা। বছরের শুরুতে জানুয়ারিতে এসেছিল ২১১ কোটি ৩১ লাখ ডলার, এরপর ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ, মার্চে ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ, এপ্রিল মাসে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ, মে মাসে ২২৫ কোটি ৪৯ লাখ, জুনে ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ, জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ, আগস্টে ২২২ কোটি ৪১ লাখ, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ, নভেম্বরে ২১৯ কোটি ৯৫ লাখ এবং ডিসেম্বরে ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার।
এই প্রবণতা ধরে রাখতে পারলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনরুদ্ধারে রেমিট্যান্স বড় ভূমিকা রাখবে বলেই অর্থনীতিবিদদের অভিমত।