নিশ্ছিদ্র দাবানলে পুড়ছে ইসরাইলের অধিকৃত জেরুজালেম। ভয়াবহ আগুন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে যে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ একে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছেন। গত কয়েক বছরের মধ্যে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল বলে জানিয়েছে দেশটির উদ্ধার সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ)। শত শত মানুষ এখন সরাসরি ঝুঁকির মুখে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এরই মধ্যে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমডিএ জানিয়েছে, ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে ২২ জনকে চিকিৎসা দিতে হয়েছে, যাদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভয়াবহ তাপপ্রবাহ ও প্রবল বাতাস এই দাবানলের কারণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগুন এমন গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে যে, নেভে শালোম, বেকোয়া, তাওজ এবং নাচশোনের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মেসিলাত জিওন অঞ্চল থেকেও লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ।
দেশের বাইরে থেকেও সহায়তা চাওয়া হয়েছে। ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সা’আর ইউরোপসহ একাধিক দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। ইতোমধ্যে ক্রোয়েশিয়া, স্পেন, ফ্রান্স, সুইডেন, আজারবাইজানসহ বেশ কয়েকটি দেশ বিমান ও দমকল বাহিনী পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
জরুরি সহায়তা হিসেবে সাইপ্রাস থেকে প্রথমে একটি সহায়তা ইউনিট পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইতালি ও ক্রোয়েশিয়া থেকে আসছে তিনটি কানাডায়ার ফায়ারফাইটার বিমান। স্পেন, ফ্রান্স এবং ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সহায়তাও আশানুরূপভাবে আসছে।
ইসরাইলি দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হাইওয়ে-১ বন্ধ করে দিয়েছে। ঘটনাস্থলে ১১৯ জন দমকলকর্মী, ১০টি অগ্নিনির্বাপক বিমান, একটি হেলিকপ্টার এবং ইসরাইলি বিমান বাহিনীসহ বিশেষ বাহিনী ইউনিট ৬৬৯ মোতায়েন করা হয়েছে।
তীব্র বাতাসের কারণে আগুন নিভানো কঠিন হয়ে উঠেছে। এর মধ্যেই ধোঁয়ায় আটকে পড়া যানবাহন থেকে নয়জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং তিনটি গাড়ি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে। পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই আগুন শুধু বনজীবন নয়, গোটা শহর ও জনগণের নিরাপত্তাকে মারাত্মক হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। ইসরাইল এখন এক ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।