আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী দেশের বৈদেশিক মুদ্রার প্রকৃত রিজার্ভ এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২০৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, যা প্রায় ২২ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলারের সমান। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, রিজার্ভের পরিমাণ এখনো ২ হাজার ৭৪১ কোটি ডলার বা ২৭ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার। এই দুই হিসাবের মধ্যে পার্থক্যটি এসেছে ৫৩৬ কোটি ডলার বাদ দেওয়ার ফলে, যা প্রকৃত রিজার্ভ গণনায় বিবেচনায় আনা হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানিয়েছেন, বৈধ পথে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে এবং রপ্তানি খাতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে, যার ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তিনি বলেন, অর্থপাচার কমে আসার ফলেই এই উন্নতি হয়েছে, যা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির জন্য এক শক্তিশালী বার্তা।
উল্লেখযোগ্যভাবে, দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রিজার্ভ ছিল ২০২২ সালের আগস্টে, যেটি ছিল ৪৮ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার। তবে নানা কারণে সেই রিজার্ভ সময়ের সাথে কমে গিয়েছিল এবং গত বছরের জুলাইয়ে তা নেমে আসে ২০ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলারে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আবারো রিজার্ভ বৃদ্ধির ধারা লক্ষ করা যাচ্ছে।
সরকার পরিবর্তনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে আর কোনো ডলার বিক্রি করছে না। বরং এখন বাজার থেকে ডলার কেনা হচ্ছে এবং পূর্বের দায় পরিশোধ করা হয়েছে বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই। এর ফলে ৩২০ কোটি ডলারের বকেয়া নিষ্পত্তি সম্ভব হয়েছে। একইসঙ্গে ডলারের বিনিময় হারও অনেকদিন ধরেই স্থিতিশীল রয়েছে ১২২ টাকায়, যা বিনিময় বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দেয়।
সবমিলিয়ে এই উন্নয়নের ধারাকে অর্থনীতির জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অগ্রগতি হিসেবেই দেখা হচ্ছে।