গুরপতওয়ান্ত সিং পান্নুন, খালিস্তান আন্দোলনের নেতা, সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রতি তার দৃঢ় সমর্থন জানিয়ে এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীকে পাঞ্জাবের ভূখণ্ড ব্যবহার করে পাকিস্তানে আক্রমণ করার বিরুদ্ধে সতর্কতা প্রদান করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক ভিডিও বিবৃতিতে পান্নুন বলেছেন, “আমরা ভারতীয় সেনাবাহিনীকে পাঞ্জাবের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানে আক্রমণ করতে দেব না।” তিনি আরও বলেন, “পাকিস্তানে আক্রমণ করার সাহস ভারতের নেই।”
পান্নুন তার বক্তব্যে পাকিস্তানের জনগণের সাথে শিখ জনগণের দৃঢ় সংহতির কথা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, “আমরা কোটি শিখ পাকিস্তানের সাথে ইটের প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে আছি।” তিনি আরও মন্তব্য করেন, ভারতে সংখ্যালঘুদের বিশেষ করে শিখদের উপর যে নির্যাতন চলছে, তা সকলের কাছে স্পষ্ট। এটি কোনো প্রাচীন ঘটনা নয়, এটি ২০২৫ সালের বাস্তবতা, এমনকি বর্তমানেও শিখ জনগণ নির্যাতনের শিকার।
পান্নুন সোজাসাপটা জানিয়ে দেন, “যারা আক্রমণ করবে, তারা বাঁচবে না।” তিনি এই বিবৃতিতে প্রাক্তন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে উদ্দেশ্য করে এই বক্তব্য দেন। তাঁর মতে, এই ব্যক্তি বা তাদের মত যারা সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ চালিয়ে আসছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পান্নুন আরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, “মোদি, অজিত ডোভাল, অমিত শাহ এবং সুশমা স্বরাজকে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় বিচারের মুখোমুখি করা হবে।” তার দাবি অনুযায়ী, ভারতের বর্তমান শাসকগণ শিখ জনগণের বিরুদ্ধে নিপীড়ন চালাচ্ছেন এবং রাজনৈতিক স্বার্থে সহিংসতা সৃষ্টি করছেন। পান্নুন ১৯৮৪ সালের অপারেশন ব্লুস্টার এবং ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার প্রসঙ্গও তুলে ধরেছেন, যেখানে তিনি অভিযোগ করেন যে ভারতে শিখ জনগণের উপর পরিকল্পিত নির্যাতন চালানো হয়েছে।
তাছাড়া, তিনি পাহেলগাঁও হামলার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “ভারত রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য তার নিজস্ব হিন্দুদের হত্যা করেছে।” এই আক্রমণের উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক লাভ এবং ভোট আদায়ের জন্য সহিংসতা সৃষ্টি করা। তিনি এই আক্রমণকে রাজনৈতিক তৎপরতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, যা পুরোপুরি পরিকল্পিত ছিল।
গুরপতওয়ান্ত সিং পান্নুনের এই মন্তব্য দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। এই মন্তব্যগুলো ভারতে শিখদের আন্দোলনের এক নতুন পর্বের সূচনা হিসেবে দেখা হতে পারে, যা শুধু ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নয়, বরং আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিমণ্ডলেও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে।