সাইফুল্লা খালিদ ওরফে সইফুল্লা কাসুরি—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, তিনিই জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ে সদ্য সংঘটিত গুলির ঘটনার মূল হোতা। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, তাঁর নির্দেশেই পাঁচ থেকে ছয় জন হামলাকারী বৈসরন উপত্যকায় ঢুকে নিরীহ পর্যটকদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার দুপুরে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন এবং গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, সাইফুল্লা মূলত পাকিস্তান-ভিত্তিক কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন লশকর-ই-তইয়েবার সঙ্গে যুক্ত। ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর যখন উপত্যকাজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছিল, সেই সময়ই লশকরের একটি ছায়া সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে টিআরএফ (দ্য রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট)। সাইফুল্লা সংগঠনটির অন্যতম শীর্ষ নেতাও। ফলে তাঁর নির্দেশে এই হামলা সংঘটিত হয়েছে, এমনটাই মনে করছিল ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী।
তবে এই সমস্ত অভিযোগ সরাসরি উড়িয়ে দিয়েছেন সাইফুল্লা নিজেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “পাহেলগাঁও হামলার সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। এই হামলা ভারতের নিজের সাজানো নাটক। পাকিস্তান কিংবা টিআরএফ-এর সঙ্গে এর কোনও সংযোগ নেই।” ভিডিওতে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধেও তীব্র ভাষায় আক্রমণ করতে শোনা যায় তাঁকে।
সাইফুল্লার এই দাবি এখন আরও বেশি করে বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে আদৌ এই হামলার পিছনে কে? ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, এই ধরণের হামলা শুধুই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত না-ও হতে পারে। আবার অনেকে বলছেন, পাকিস্তান ও তাদের মদতপুষ্ট সংগঠনগুলোর একটা বড় পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এই হামলা সংগঠিত হয়েছে।
এদিকে, হামলার দায় অস্বীকার করলেও সাইফুল্লার অতীত কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে টিআরএফ-এর সঙ্গে তাঁর সংযোগ নিয়ে ভারতীয় গোয়েন্দাদের সন্দেহ রয়েই গেছে। সুতরাং, তাঁর বক্তব্যে কতটা সত্যতা রয়েছে, তা তদন্তের পরেই নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।