আতাউর রহমান কাওছার, বালাগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি:
সিলেটের বালাগঞ্জের পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের ফাজিলপুরে কুশিয়ারা নদীর তীর ধসে পড়ায় ঝুঁকিতে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কুশিয়ারা ডাইক ও একটি কালভার্ট। ফাজিলপুর নদী তীরের বড় একটি অংশ ধসে পড়লে বাঁধের ওপর নির্মিত একটি কালভার্টের পাশের মাটিও ধসে যায় এবং বিগত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বাধের অর্ধেক অংশ নদী গর্ভে চলে গেছে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এবং এলাকাবাসী জানান , কুশিয়ারা নদীর বালাগঞ্জ অংশের ফাজিলপুর নদীতীরের অনেক জায়গা ভেঙে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অর্ধেক অংশ নদীতে গর্ভে চলে গেছে নদীর তীর। এরই মধ্যে গত বছরের নভেম্বর মাসে বাঁধসংলগ্ন তীরটির বড় একটি অংশ ধসে পড়লে বাঁধের ওপর নির্মিত সড়কের কালভার্টের পাশের মাটি ধসে যায়। এমন অবস্থায় শংকায় পড়েছেন পৈলনপুর ইউনিয়ন ও এলাকাবাসী।
জানা গেছে, বালাগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ওসমানীগরের শেরপুর পর্যন্ত কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর পাকা সড়ক তৈরি করেছে এলজিইডি। যে সড়ক দিয়ে দুই উপজেলার বাসিন্দারা চলাচল করে থাকে। নদীর বালাগঞ্জ অংশের ফাজিলপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে নদীভাঙন অব্যাহত থাকায় অনেক জায়গায় নদীর তীর বাঁধের কাছে চলে এসেছে। ভাঙন অব্যাহত থাকায় সড়কটিও নদীতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ সড়কটি ভেঙে গেলে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ব্যাপক দুর্ভোগে পড়বে বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। এর আগে ফাজিলপুর এলাকায় বড় ধরনের নদীভাঙন দেখা দিলে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ স্থাপন করে দেয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভাঙনকবলিত স্থানে যতগুলো জিও ব্যাগ দেওয়ার কথা ছিল সে পরিমাণ দেওয়া হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা বদরুল ইসলাম বলেন, ফাজিলপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে নদীভাঙনের শিকার হয়ে আসছে এলাকাবাসী। যে স্থানটি ভেঙেছে গত বছরও সেখানে এক ব্যক্তির বসতঘর ছিল। নদী ভেঙে সড়কের কাছে চলে আসায় তারা খুবই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। যদি সড়কটি ভেঙে যায় তবে তাদের এলাকাটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ গত বছরের অক্টোবরে , তিনি ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে বলেছিলেন । সেখানে ভাঙন রোধে তাৎক্ষণিক ২৫ লাখ টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ে জিও ব্যাগ ও টিউব ব্যাগ স্থাপনের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। নদীভাঙন রোধে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ১১০ কিলোমিটার চর কাটার একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন বলেন নদীভাঙনের পর ইউএন মহোদয়ের মাধ্যমে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ড কে অবগত করলে তারা পরিদর্শন করে এখানে জিও ব্যাগ দিয়ে ভরাট করার আশ্বাস দেন এবং পরবর্তীতে বড় একটা প্রকল্প নিয়ে এখানে ব্লক দেওয়ার কথা বলেন। তার অংশ হিসেবে বিগত কয়েকদিন আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড এখানে কিছু বললি (গাছের খুটি) গেড়ে শুধুমাত্র ভাংগা অংশে শুধু মাটি ও পলি ব্যাগ দিয়ে গড়ে দিয়েছে, বাকি অংশ যেভাবে ছিল সেভাবে রয়েছে। কিন্তু পরবর্তী কি পদক্ষেপ কি নেওয়া হয়েছে, সেটা আমার জানা নাই।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিত কুমার চন্দ জানান পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কে অবিহিত করেছি তারা জানিয়েছে বিজ্ঞপ্তি(টেন্ডার)দিয়েছে কাজের জন্য আগ্রহী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাচ্ছে না। পাওয়া গেলে কাজ শুরু হবে।