বিশ্বের ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের আধ্যাত্মিক নেতা পোপ ফ্রান্সিস আর নেই। স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে ভ্যাটিকানের কাসা সান্তা মার্তায় নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তার শারীরিক অবস্থা গত কিছুদিন ধরে সংকটজনক ছিল বলে জানায় ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ।
পোপের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে কার্ডিনাল কেভিন ফারেল এক আবেগঘন বিবৃতিতে জানান, “আমাদের প্রিয় পবিত্র পিতা ফ্রান্সিস চলে গেছেন। তিনি আমাদের শিখিয়ে গেছেন সাহস, আনুগত্য এবং সার্বজনীন ভালোবাসার মূল্যবোধ, বিশেষ করে সমাজের প্রান্তিক ও দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে।”
পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন ইতিহাসের পথভ্রষ্ট সময়েও মানবিকতার এক উজ্জ্বল প্রতীক। সংস্কারের মাধ্যমে ক্যাথলিক গির্জাকে সময়োপযোগী করার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন তিনি। ৭৪১ সালের পর তিনিই ছিলেন প্রথম নন-ইউরোপীয় পোপ, যার আগে এই পদে শেষবার বসেছিলেন সিরিয়ান বংশোদ্ভূত তৃতীয় গ্রেগরি।
২০১৩ সালে যখন তিনি পোপ নির্বাচিত হন, তার বয়স ছিল সত্তরের ঘরে। তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন পোপ ষোড়শ বেঞ্জামিনের পর, যিনি ৬০০ বছরের ইতিহাসে প্রথম স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। পোপ ফ্রান্সিস ও বেঞ্জামিন এক দশকেরও বেশি সময় একসঙ্গে কাটিয়েছেন ভ্যাটিকান গার্ডেনে।
পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন সাহসী ও মানবিক নেতৃত্বের প্রতীক। ধর্মীয় গোঁড়ামির বাইরে গিয়ে তিনি ধর্মের আসল বার্তা—ভালোবাসা, সহানুভূতি ও ন্যায়বিচার—মানুষের সামনে তুলে ধরেছিলেন। তার প্রস্থান একটি যুগের অবসান, কিন্তু তার দেখানো পথ থেকে যাবে অনন্তকাল।