শেরপুর নালিতাবাড়ী উপজেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত খড়স্রোত ভোগাই ও চেল্লাখালী নদী, দুদুয়ার খাল, বুড়ীভোগাই সহ আরও কিছু ছোটবড় খাল এই উপজেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
এসব নদী ও খাল সহ পাহাড়, টিলা এমনকি ফসলী জমির অভ্যন্তর যেখানেই বালুর সন্ধান পাওয়া যায় সেখানি নিত্য নতুন বালুর স্পট তৈরী করে বেপরোয়াভাবে বালু উত্তোলনের পায়তারা করে থাকে অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা। এক ভোগাই নদীর নালিতাবাড়ীর অংশের দৈর্ঘ্য ২৫
থেকে ৩০ কিলোমিটার , যার পুরোটাই বালুর স্পট। পুরো উপজেলার আনাচে কানাচে এরূপ ১০০ টির মতো বালুর অবৈধ স্পট রয়েছে।
অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে সব সময়ে কঠোর অবস্থানে আছে প্রশাসন। দিন রাত নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
বিগত ৬ মাসে উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ৭৫ টি মামলায় ৬০ লাখ টাকা অর্থদন্ড আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা করেছেন।
তাছাড়া বালু উত্তোলনের সাথে সরাসরি জড়িত ৩৫ জনকে ধৃত করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে।
উত্তোলিত জব্দকৃত বালু নিলামের মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করেছে, নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রশাসন
এ ছাড়া বিগত ৬ মাসে ১০০ টিরও অধিক দীর্ঘ অভিযান পরিচালনা করেছে উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানাগেছে, এক একটি অভিযানের ব্যপ্তি কমপক্ষে ৬ ঘন্টা থেকে ১৬ ঘন্টা পর্যন্ত হওয়ার রেকর্ডও রয়েছে।
প্রত্যেকটি অভিয়ানে পুলিশ, আনসার ব্যাটেলিয়ন সহ বন বিভাগ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) এর তহশিল অফিসার সহ কর্মচারী ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের অংশ গ্রহন করে।
এ পর্যন্ত নিয়মিত মামলা হয়েছে প্রায় ১০ টি অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে প্রতিনিয়ত বালু সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি, অভিযোগের শুনানী, সচেতনতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন, প্রচারণা ইত্যাদি কাজ চলমান রেখেছে উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা প্রশাসনের দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি স্ততা সর্বোচ্চ গুরুত্ত্ব দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করছে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
উপজেলা প্রশাসন ধ্যর্থহীন ভাবে প্রকাশ করেন, এরপরও এত্তো এত্তো বালুর স্পট এবং দাপ্তরিক অন্যান্য কাজের ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে নদীর পাড় ভেংগে বালু তুলে অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা যেটি কিছু কিছু পয়েন্টে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
তবে প্রশাসন যদি সোচ্চার না হতো নদী বা পাহাড়ের কোনরূপ অস্তিত্বই হয়তো রাখতো না এসব বালু সন্ত্রাসীরা। বালুর খোজ পেলে প্রয়োজনে পাতাল পর্যন্ত গর্ত করতেও দ্বিধা করেনা না তারা।
তবে আশার কথা হচ্ছে বর্তমানে বালুর কোন বৈধ ইজারা পয়েন্ট নেই নালিতাবাড়ীতে।
ফলে নালিতাবাড়ী থেকে বের হওয়া যেকোন বালু/বালুর ট্রাক সম্পুর্ন অবৈধ। যেখানে ধরা পড়ুক তা অবৈধ।আ্শা করি অচিরেই বালু উত্তোলন শূণ্যের কোঠায় চলে আসবে ইন শা আল্লাহ।
উপজেলা প্রশাসন প্রকাশ করেন, দু:খজনক ব্যপার হচ্ছে এলাকাবাসী প্রশাসনকে সহযোগিতা না করলেও অনেক এলাকাবাসী নিজেদের জায়গা ভাড়া দিয়ে অসাধু বালু ব্যবসায়ীদের ঠিকই সহযোগিতা করে থাকে।
এ ক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসন সকল সচেতন নালিতাবাড়ীবাসীর প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়ে বলেন আপনাদের নদী, পাহাড়, ঘরবাড়ী, রাস্তা-ঘাট রক্ষায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করুন।
লাল মোঃ শাহজাহান কিবরিয়া
শেরপুর