সোমবার সকালে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে স্বাক্ষরিত হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক। এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান।
এই সমঝোতা অনুযায়ী, বাংলাদেশ রেলওয়ের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হাসপাতালগুলো এখন থেকে শুধু রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, রেলপোষ্য ও যাত্রীদের জন্য নয়, বরং সাধারণ জনগণের জন্যও চিকিৎসাসেবা উন্মুক্ত থাকবে। পাশাপাশি, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হবে এসব হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম।
চুক্তির আওতায় রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিকিৎসা সুবিধা পূর্বের মতোই বহাল থাকবে। তবে এবার এই সুবিধার পরিধি আরও বিস্তৃত হচ্ছে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে।
চাহিদা ও বাস্তবতা মিলিয়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত
বর্তমানে দেশের প্রধান প্রধান শহর—যেমন ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীর সরকার-চালিত হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন উপচে পড়া রোগীর ভিড় লেগেই থাকে। চিকিৎসাসেবার এই অতিরিক্ত চাপে সেবার মান ও সময়—দুই-ই বিঘ্নিত হয়। অন্যদিকে, রেলওয়ে অধীনে পরিচালিত হাসপাতালগুলোতে রোগীর উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে খুবই কম।
এই পরিস্থিতিতে রেলওয়ে হাসপাতালগুলোকে জনগণের জন্য খুলে দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত একদিকে যেমন চিকিৎসা খাতের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনবে, অন্যদিকে দেশের একটি বড় অংশের মানুষ স্বল্প খরচে সহজেই স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার কাঠামো
এই সমঝোতা অনুযায়ী, রেলওয়ে হাসপাতালগুলোর যাবতীয় সম্পদ—স্থাবর ও অস্থাবর—একটি যৌথ কেন্দ্রীয় কমিটির অধীনে পরিচালিত হবে। এই কমিটি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত হবে।
তবে হাসপাতালগুলোতে নিয়োজিত বিদ্যমান জনবল ও তাদের প্রশাসনিক কার্যক্রম আগের মতোই রেলওয়ের অধীনেই থাকবে।
সেবার সম্প্রসারণে সম্ভাবনার নতুন দরজা
এই সমঝোতা শুধু হাসপাতাল ব্যবহারের সুযোগ নয়, বরং একে একটি নীতি-পরিবর্তনের দৃষ্টান্ত হিসেবেও দেখা যেতে পারে। পরিত্যক্ত বা অপ্রতুল ব্যবহৃত সরকারি অবকাঠামোকে জনসেবায় কাজে লাগিয়ে, সীমিত সম্পদেই বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে সেবা দেওয়ার একটি কার্যকর রূপরেখা এটি।