যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত অসংখ্য বিদেশি শিক্ষার্থীর শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে এফ-১ ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্তের কারণে। এই প্রেক্ষাপটে দেশটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট অভিবাসন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নিউ হ্যাম্পশায়ারের একটি ফেডারেল আদালতে এই মামলা করে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (ACLU)। মামলায় দাবি করা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন একতরফাভাবে হাজার হাজার আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীর শিক্ষার্থী মর্যাদা বাতিল করেছে—প্রস্তুতি বা পর্যাপ্ত নোটিশ ছাড়াই।
মামলার আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন চীন ও ভারতের শিক্ষার্থী—চীনের হাংরুই ঝাং এবং হাওয়াং আন, ভারতের লিংকিত বাবু গোরেলা, থানুজ কুমার গুম্মাডাভেলি ও মানিকান্ত পাসুলা।
হাংরুই ঝাংয়ের এফ-১ ভিসা বাতিল হওয়ার ফলে তার গবেষণা সহকারির চাকরিটিও হারিয়ে গেছে। হাওয়াং আন ইতোমধ্যেই পড়াশোনার পেছনে তিন লাখ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় তিন কোটি ৬০ লাখ) ব্যয় করেছেন। কিন্তু এখন বাধ্য হচ্ছেন ডিগ্রি ত্যাগ করতে।
গোরেলা, যিনি ২০ মে তার ডিগ্রি শেষ করবেন বলে আশা করেছিলেন, তিনি এখন বৈধ ভিসা না থাকায় সেই সুযোগ হারানোর ঝুঁকিতে। আর গুম্মাডাভেলি ও পাসুলার এখনো অন্তত একটি সেমিস্টার বাকি, কিন্তু তাদের শিক্ষাজীবনও হুমকির মুখে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই কঠোর ভিসা নীতির কারণে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় ও আন্তর্জাতিক ছাত্র সমাজে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। আমেরিকায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ চীন ও ভারত থেকে আসা, যারা দেশটির উচ্চশিক্ষা খাতে একটি বিশাল অবদান রাখে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসের শেষ দিক থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে অথবা তাদের আইনি অবস্থান স্থগিত করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ, শিক্ষকদের বিবৃতি ও নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা গেছে, এই পরিস্থিতি শুধু শিক্ষার্থীদের নয়, প্রতিষ্ঠানগুলোকেও বড় ধরনের প্রশাসনিক ও মানবিক চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।