জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে বলেন, দেশে এখন এমন এক বাস্তবতা তৈরি হয়েছে, যেখানে পুলিশ বিএনপি ও জামায়াতের কথাও শুনছে, আবার হা-হুতাশও করছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এই প্রেক্ষাপটে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা সহিংসতা ও জোরজবরদস্তিমূলক হবে, যার কোনো বৈধতা থাকবে না।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, সকল রাজনৈতিক সংকট ও বিভক্তি কাটিয়ে উঠতে হলে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করতে হবে। এই নির্বাচনের মাধ্যমেই একটি বৈধ সরকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
নব্য ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিয়ে তিনি বলেন, “যেখানে বাধা আসবে, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রয়োজনে জীবন দিতেও প্রস্তুত থাকতে হবে।” তাঁর মতে, ফ্যাসিবাদের প্রভাব এখন মিডিয়া থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। চাঁদাবাজি, দখল এবং নিপীড়নের মাধ্যমে একটি ভয়ঙ্কর শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনি সবকিছু নিজের হাতে নিয়ে ক্ষমতায় থেকেছেন। কিন্তু আপনারাও চিরকাল থাকতে পারবেন না। যাদের নির্বাচন থেকে বাদ দিচ্ছেন, তারা কি ঘরে বসে থাকবে? এমন নির্বাচন করে দেশে স্থিতিশীলতা আসবে না।”
তিনি আরও বলেন, সবাইকে সঙ্গে নিয়েই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। দেশের অর্ধেক জনগণকে বাদ দিয়ে কেউ ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে না। “আমরা সবাই একত্রিত হয়েছিলাম, কিন্তু এখন জাতিকে দুই ভাগে ভাগ করে রাখা হয়েছে। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে, প্রয়োজন হলে আধপেট খেয়ে হলেও দেশ গড়তে হবে,” — বলেন তিনি।
নব্য ফ্যাসিবাদের উত্থান প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “যারা অতীতে ফ্যাসিবাদের শিকার হয়েছেন, আজ তারাই সেই ফ্যাসিবাদকেই অনুসরণ করছেন। কিন্তু ফ্যাসিবাদের পরিণতি একদিন সবার জন্যই ভয়াবহ হবে।”
পুলিশ বাহিনী নিয়ে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদের দোসররা যখন আঘাত হানবে, পুলিশ তাদের সহায়তা করবে। কিন্তু প্রতিবাদ থেমে যাবে না। রাস্তায় লাখো মানুষ এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে।”
এছাড়াও, জাতীয় পার্টিকে ঘিরে নতুন করে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন তিনি। তার ভাষ্য মতে, দলের প্রতীক ‘লাঙ্গল’ অন্যদের দিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। এমনকি নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ তোলেন তিনি। সেই কর্মকর্তা অতীতে তার বিরুদ্ধে নির্বাচনে কারচুপি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমাদের কাউন্সিল যাতে না হয়, তার জন্য কোনো মিলনায়তন ভাড়া দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের কাউন্সিল ঠেকাতে পারলেই আমাদের বাতিল করতে পারবে— এই নীতিতেই চলছে ষড়যন্ত্র।”