মুক্তাগাছা( ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় ব্যবসায়ী মোখলেছুর রহমান হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার বিকালে চেচুয়া কেশবপুর বাজার এলাকায় হাজারো ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে।
বিক্ষুব্ধ জনতা ময়মনসিংহ-জামালপুর মহাসড়ক প্রায় তিন ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে, ফলে ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। এমনকি জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িও যানজটে আটকে যায়।
বিক্ষোভের একপর্যায়ে মুক্তাগাছা থানার ওসি কামাল হোসেন ঘটনাস্থলে এলে বিক্ষোভকারীরা তার পদত্যাগের দাবি জানায়। উত্তেজিত জনতা তার দিকে তেড়ে এলে তিনি পাশের একটি মার্কেটে আশ্রয় নেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও বিক্ষোভকারীদের তোপের মুখে পড়তে হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী এসে ওসি ও ইউএনওকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়।
র্যাবের একটি বিশেষ দল এসে পরিস্থিতি শান্ত করে এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দেওয়া হয়। পরে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ প্রত্যাহার করলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৭ মার্চ পারিবারিক বিরোধের জেরে কেশবপুর বাজারের মুদি দোকানদার মোখলেছুর রহমানকে একদল দুর্বৃত্ত হামলা করে গুরুতর আহত করে। প্রথমে মুক্তাগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে তিনি মারা যান।

ব্যবসায়ী মালিক সমিতি ও এলাকাবাসী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দিয়েছে। মুক্তাগাছা থানার ওসি কামাল হোসেন জানান, ঘটনার পর আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতে চালান দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা জামিনে মুক্তি পায়। নিহতের মৃত্যুর খবর আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম বলেন, “জনগণের আইনি চাহিদা পূরণে প্রশাসন সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবে। ইতোমধ্যে আসামিদের গ্রেফতারের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।”
এলাকায় এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়দের দাবি, অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।