ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার উপত্যকায় “ব্যাপক হামলা” চালাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (IDF) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা হামাসের “সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তু”গুলিকে নিশানা করছে। রায়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার কেন্দ্রীয় দেইর আল-বালাহ এলাকায় তিনটি বাড়ি, গাজা সিটিতে একটি বিল্ডিং এবং খান ইউনিস ও রাফাহে হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলাগুলি ১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতির পর গাজায় সবচেয়ে বড় আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
যুদ্ধবিরতি সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও, দুই পক্ষের মধ্যে কোন সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এই পরিস্থিতিতে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ মঙ্গলবার সকালে হামলা চালানোর আদেশ দেন। বিবৃতিতে বলা হয়, “হামাস বারবার আমাদের অপহৃত মানুষদের মুক্তি দিতে অস্বীকার করেছে এবং তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বার্তা বাহক স্টিভ উইটকফ এবং অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীদের পক্ষ থেকে পাঠানো প্রস্তাবগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে।”
এছাড়া, ইসরায়েলি সরকারের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, “ইসরায়েল এখন থেকে হামাসের বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।” এই হামলার পরিকল্পনা গত সপ্তাহে ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস উপস্থাপন করেছিল, যা পরে রাজনৈতিক নেতৃত্ব অনুমোদন করে।
এদিকে, মধ্যস্থতাকারীরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু ১ মার্চ প্রথম দফা যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর থেকে এখনও কোনও সমাধানে পৌঁছানো যায়নি। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র একটি প্রস্তাব উত্থাপন করে, যেখানে যুদ্ধবিরতির প্রথম দফাটি এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল, যাতে হামাসের হাতে আটক আরও কিছু বন্দি এবং ইসরায়েলের হাতে আটক ফিলিস্তিনি বন্দির আদান-প্রদান অন্তর্ভুক্ত থাকে। তবে, প্যালেস্টাইনী একটি সূত্র জানায়, ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে প্রস্তাবিত চুক্তির মূল বিষয়গুলো নিয়ে তীব্র মতবিরোধ রয়েছে।
গাজার পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠেছে, কারণ একদিকে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আক্রমণ এবং অন্যদিকে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনার অগ্রগতি নেই। বিশেষ করে, দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তির আশা ক্ষীণ হয়ে পড়েছে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে সামরিক উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মধ্যস্থতাকারীরা ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করলেও, চলমান এই সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যতে কোন স্থিতিশীল সমাধান পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান।