ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রায় দেশটির সংসদে জানিয়েছেন, বাংলাদেশি নাগরিকদের গ্রেপ্তারের হার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩ সালে মোট ২,৩১১ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
গ্রেপ্তারের পরিসংখ্যান (২০২৩-২৪)
প্রতিমন্ত্রী সংসদে বলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে সর্বোচ্চ ৩৩১ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর বাইরে প্রতি মাসেই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গ্রেপ্তার হয়েছে:
- জানুয়ারি: ১৩৮
- ফেব্রুয়ারি: ১২৪
- মার্চ: ১১৮
- এপ্রিল: ৯১
- মে: ৩২ (সর্বনিম্ন)
- জুন: ২৪৭
- জুলাই: ২৬৭
- আগস্ট: ২১৪
- সেপ্টেম্বর: ৩০০
- ডিসেম্বর: ২৫৩
- ২০২৪ সালের জানুয়ারি: ১৭৬
সীমান্ত নজরদারি আরও কঠোর হচ্ছে

ভারত সরকার সীমান্ত সুরক্ষা ও অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। নতুন প্রযুক্তি ও বাড়তি নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের ফলে গ্রেপ্তারের সংখ্যা বেড়েছে।
নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা:
- আসামের ধুবড়ি জেলায় উন্নত নজরদারি পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।
- থার্মাল ইমেজার, নাইট ভিশন ডিভাইস, মনুষ্যবিহীন আকাশযান (ড্রোন), ইনফ্রারেড সেন্সর ও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
- বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও স্থানীয় পুলিশের সাথে সমন্বিত টহল ও যৌথ অভিযান চালানো হচ্ছে।
কেন বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার বাড়ছে?
বিশ্লেষকরা বলছেন, কয়েকটি কারণ বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অভিবাসন বাড়ার পেছনে ভূমিকা রাখছে:
- কর্মসংস্থানের অভাব: উন্নত কাজের সুযোগের জন্য বাংলাদেশিরা ভারতে প্রবেশ করছে।
- মানবপাচার চক্র: দালালদের মাধ্যমে অনেকেই অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করছে।
- নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার: উন্নত প্রযুক্তির ফলে সীমান্ত পারাপার আগের তুলনায় কঠিন হয়ে গেছে, ফলে ধরা পড়ার হারও বেড়েছে।
দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব

বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশের কারণে ভারত সরকার নতুন আইন প্রণয়নের কথা ভাবছে, যা অবৈধ অভিবাসীদের জন্য শাস্তি আরও কঠোর করতে পারে। এর ফলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনার প্রয়োজনীয়তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পরিস্থিতি আগামী দিনগুলোতে আরও উত্তপ্ত হতে পারে, বিশেষ করে যদি অবৈধ অভিবাসন বন্ধে নতুন কঠোর আইন কার্যকর হয়।