শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় সেতুর অভাবে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন ৮ গ্রামের হাজারো মানুষ।
সরোজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ১২ কিলো উত্তর প্রশ্চিমে উন্নয়ন বঞ্চিত জনপদ গোবিন্দপুর গ্রাম। এই গ্রামের ভিতর দিয়ে পাহাড়ী ঢেওফা নদী প্রবাহিত হয়ে গেছে, কিন্তু পারাপারের জন্য কোন সেতু নেই । এই গ্রামের ভিতর দিয়ে পাশ্ববর্তী প্রায় ৮ গ্রামের হাজারো মানুষ এর যাতায়াত একটি ব্রীজের জন্য তাদের ভোগান্তির শেষ হচ্ছেনা। অত্যাধিক ভোগান্তিতে রয়েছেন কোমলমতী শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ বয়োজ্যেষ্ঠ ও গর্ভবতী নারীরা।
সেতুর অভাবে শিক্ষার্থীরা ঠিক মত স্কুলে যেতে পারে না। স্কুলে যেতে কোমলমতী শিক্ষার্থীদের একটি নদী ও দুই টি নালা পার হতে হয়, শুষ্ক মৌসুমে নদী পার হতে পারলেও, বর্ষা মৌসুমে নদী পার হওয়া খুব ঝুকিপূর্ণ । অনেক শিক্ষার্থীর সেতুর অভাবে উচ্চশিক্ষার আশা পূরন হয়নি বেড়েছে বাল্যবিবাহের হার, এ জেনো এক অন্ধকার আচ্ছন্দ্রময় জনপদ।
গোবিন্দপুর গ্রামের মোজাম্মেল হোসেন বলেন, যুদ্ধের পর থেকে শত চেষ্টা করেও একটি রাস্তা ও ব্রীজের দাবী জানিয়ে আসলেও আজ প্রযন্ত মেলেনি কোন প্রতিকার।রাস্তা ও ব্রীজের জন্য ছেলে মেয়েদের বেশী দূর লেখাপড়া করাইতে পারি নাই, কেমনে লেখাপড়া করবো ব্রীজ তো নাই সাতার কেটে পার হয়ে স্কুলে যাওয়া সম্ভব হয়নি ছেলে মেয়েদের।
আমি কৃষি কাজ করে সংসার চালাই, রাস্তার অভাবে বর্ষা মৌসমে ধান,পাট বিক্রি করতে পারি না। মসজিদে নামাজ আদায় করতে গেলেও নদী পার হয়ে যেতে হয়, খুব কষ্ট করে আমাদের চলাফেরা করতে হচ্ছে, আমাদের একটায় দাবী একটা ব্রীজ চাই।
গোবিন্দ্রপুরের স্থানীয় বাসিন্দা মনু মিয়া বলেন, আমি বৃদ্ধ মানুষ, সেতুর অভাবে নিদারুণ কস্ট করছি, ব্রীজ ছাড়া এই নদী পারা পার হওয়া আমাদের জন্য খুব ঝুকিপূর্ণ, কিন্তু জিবনের তাগিদে ঝুকি নিয়ে আমাদের নদী পারাপার হতে হচ্ছে, অনেক নেতা কর্মী ব্রীজের রাস্তার আশ্বাস দিলেও আমাদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি।
সিংগাবড়ুনা গ্রামের বিপ্লব মিয়া বলেন, আশে পাশের ৭ গ্রামের মানুষ এই রাস্তা ব্যবহার করে যাতায়াত করেন, এই গোবিন্দ্রপুর গ্রাম দিয়ে, ভায়াডাংগা, হাসধরা, চিংগুততার, বাঘহাতা, বড়ুকুচি, সিংগাবড়ুনা, মাটিফাটা, কতুবপুর লোকজন বেশী চলাচল করেন। এই গ্রামে সেতু নির্মিত হলে আশে পাশে অঞ্চলের প্রায় ১০ কিঃ মিঃ রাস্তার দূরত্ব ও সময় দুইটায় কমে যাবে।
সিগাবড়ুনার খলিলুর রহমান বলেন, গোবিন্দপুর গ্রামে সেতু নির্মিত হলে, এই এলাকা সাধারণ জনগন সহ ইউনিয়নের সকল জনগন সুবিধাভোগ করবে।
সিংগাবড়ুনা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড মেম্বার নুরআলম জানান, এই এলাকার সাধারণ জনগন চরম দূর্ভোগে বসবাস করছে, শিক্ষা ব্যবস্থা একবারে ভেংগে পড়েছে, গর্ভবতী নারীরা ও সাধারণ জনগনের তাৎক্ষণিক উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে রাস্তা ও সেতুর অভাবে মিলছে না চিকিৎসা। তিনি আরো জানান পরিষদ থেকে উন্নয়নের জন্য যে টাকা বাজেট হয় তা দিয়ে এই সমস্যা উত্তরন করা সম্ভব না, এই সমস্যা প্রতিকার এর জন্য সংশ্লিষ্ট উদ্ধতন কর্মকর্তা দের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, শ্রীবরদী উপজেলা প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, আমরা চেষ্টা করি কোন এলাকা যাতে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত না হয়, উপরের মহল থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমতি আসলে দ্রুত ব্রীজ নির্মান সম্ভব হবে।