গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়মিত যৌথ অভিযানে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার ৪ নং বরিশাল ইউনিয়ানে পশ্চিম গোবিনাথপুর এ অবস্থিত এম এম বি ব্রিকস নামক অবৈধ ইট ভাটায় লোক দেখানো অভিযান করা হয়েছে। এ অভিযানের পরে অক্ষত রয়েছেন ভাটা চিমনি ও জ্বলছে ইটভাটার আগুন।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আলাউদ্দিন ভুইযা এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ইন্সেপেক্টর শের আলীর নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযান পরিচালিত হয়েছে । এ অভিযান পরিচালনার সময় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আইনগত ভাবে শক্ত অবস্থানে থাকলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের ইন্সেপেক্টর শের আলী কখনও অতিরিক্ত গরম, আবার কখনও স্থানীয়দের দোহাই দিয়ে লোক দেখানো এ অভিযান সম্পন্ন করা জনমনে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে।
উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,বার বার প্রাথমিক বিদ্যালয় সংগ্লন্ন এ অবৈধ ইটভাটাটিতে লোক দেখানো অভিযান করা হয়। প্রভাবশালি ও বিত্তশালী ভাটা মালিক ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় পুর্নরায় চালু করেন ভাটাটি।এর আগের অভিযান গুলোর কয়েকদিন পরে ভাটাটি চালু করা হলেও এবারের অভিযানে দিনেও ভাটাটিতে আগুন জ্বলছে, এখনো পোড়ানো হচ্ছে ইট। তারা আরো বলেন, লোক দেখানো এ অভিযানে লাভবান কে সেটা সংশ্লিষ্টদের ক্ষতিয়ে দেখা দরকার।
পরিবেশে অধিদপ্তরের ইন্সেপেক্টর শের আলির কাছে এবিষযে জানতে চাইলে তিনি দায় সারা ভাবে স্থানীয়দের এবং লজিষ্টিক সার্পোট কম থাকার অজুহাত দেখান। অথচ সেনাবাহীনির একটি দল এবং পুলিশ প্রশাসন সেখানে উপস্থিত ছিল। এ অভিযানের সময় ইটভাটাটিতে একটি পানি ছিটিয়ে ও চিমনিতে ভেকুর হাচর দিয়ে ও ব্যাটারির উপরে সাজানো ইট ফেলে দিয়ে অভিযান সমাপ্ত করা হয়, তবে কোন জরিমানা করা হয়নি।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আলাউদ্দিন ভুইয়ার সাথে কথা বললে তিনি জানান মহামান্য হাই কোর্টের আদেশের উর্দ্ধে আমরা কেউ না, তবে পরিবেশ কর্মকর্তা কেন লজিস্টিক সার্পোট না থাকার কথা বলে এড়িয়ে যাচ্ছে সেটি বোধ গম্য নয়।
এবিষয়ে পলাশবাড়ী সচেতন নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ দাবী করেন, উপজেলা সকল ইটভাটা অবৈধ, সেখানে একটি মাত্র ইটভাটায় লোক দেখানো অভিযান করে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা পকেট গরম করে নিয়ে যাবেন আর আমাদের অভিযানের গল্প শোনাবেন তা মেনে নেওয়া যায়। লোক দেখানো অভিযান ও স্বজনপ্রীতি বন্ধ করে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে।
এদিকে এঘটনাটি ফলাও করে প্রচার করছে একদল গণমাধ্যমকর্মী তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করছে এ ইটভাটাটি গুড়িয়ে দিয়েছে। অথচ অভিযানের সময় হতে ইটভাটাটি এখনো অক্ষত রয়েছে, এখনো ইট পোড়ানো হচ্ছে।
এদিকে,গার্ডিয়ান অব ক্লাইমেট এ্যাকশনের সভপতি মো: মারুফ মিয়া জানান অবৈধ সকল ইট ভাটা তো অপসারন করতেই হবে, তবে অতি দ্রুত বিদ্যালয় এবং লোকালয় সংলগ্ন সকল ইট ভাটা অপসরনের দাবিও জানান। তিনি আরো বলেন আমরা শহরে মানববন্ধন করেছি এতেও যদি প্রশাসনের টনক না নড়ে তবে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসুচি সহ কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
উল্লেখ্য, দেশের সকল অবৈধ ইট ভাটা ভেঙ্গে দেয়ার জন্য মহমান্য হাই কোর্টের আদেশ থাাকা সত্বেও মানবিক কারনে গত দু মাসে জেলার এসব ইট ভাটা মালিকদের সময় প্রদান করলেও তারা তা না মেনে উল্টো তারা এসবের বিরুদ্ধে মানব বন্ধন করে। পরবর্তিতে জেলার ৫২ টি ভাটা মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করে বি এস টি আই। এর মধ্যে এখনো পলাশবাড়ী উপজেলার অবৈধ ১৮ টি ইটভাটা চলমান রয়েছে। এসকল অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন উপজেলার সচেতন মহল।