বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ পাঁচটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মোট ২ হাজার ৩৮৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে সম্প্রতি প্রকাশিত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। কমিশনটি উল্লেখ করেছে যে, এই নির্বাচনে মোট ১৯ লাখ ৬২ হাজার জনবল নিয়োজিত ছিল, তবে মাত্র ৯ লাখ জনবল দিয়ে ৬০০ কোটি টাকায় এই নির্বাচনের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব ছিল।
কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলিতে অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা। পাঁচটি নির্বাচনে এর মধ্যে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভা নির্বাচন অন্তর্ভুক্ত ছিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন সফল করতে খরচ হয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। এ নির্বাচনে কাজ করেছে ৮ লাখ ২৪ হাজার ৫৯৮ জন। তবে ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনকে ‘একদলীয়’ ও ‘প্রহসনের’ নির্বাচন হিসেবে অভিহিত করেছে সংস্কার কমিশন। কমিশন মনে করে, এই নির্বাচন ঘিরে দলের অভ্যন্তরে ব্যাপক সন্ত্রাস সংঘটিত হয়েছে এবং বিরোধী দল না থাকায় এটি কোনভাবেই প্রকৃত নির্বাচন হিসেবে গণ্য করা যায় না।
কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ প্রতিবেদনটি সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছেন। প্রতিবেদনটি অনুসারে, ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই পাঁচটি নির্বাচনই একদলীয় ছিল এবং নির্বাচনে ব্যয় অনেক বেশি ছিল।
বিরোধী দলের দাবি অনুযায়ী, এসব নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দল নিজেদের পক্ষে ফলাফল নিশ্চিত করতে চেয়েছিল, যার ফলে ভোটারদের অংশগ্রহণ এবং রাজনৈতিক প্রকৃততা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সংস্কার কমিশন পরামর্শ দিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার তাদের ব্যবস্থাপনায় আগামী জুনের মধ্যে নতুন স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে পারে।