এস এম আব্দুল্লাহ সউদ, কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি:
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় এক রাতেই দুটি বাল্যবিবাহ বন্ধ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামিমা আক্তার জাহান। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বর ও অভিভাবকদের জরিমানা করার পাশাপাশি মুচলেখা নেওয়া হয়, যাতে ভবিষ্যতে এই নিষিদ্ধ কাজ কেউ না করতে পারে।
সোমবার (৩ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কালাই উপজেলার ব্র্যাকের এক কর্মী ও স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে প্রথম বিয়ের খবর পান প্রশাসনের কর্মকর্তারা। জানা যায়, কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পূর্ব পাশে,জয়পুরহাট সদরের ধারকি গ্রামের মৃত হাফিজার রহমানের ছেলে আবু হানিফের সঙ্গে কালাই পৌরসভার আকন্দপাড়ার মৃত নজির উদ্দিনের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া (১৪) কিশোরীর বিয়ে চলছে।
সংবাদ পাওয়ার পরপরই ইউএনও শামিমা আক্তার জাহান দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বর আবু হানিফকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পাশাপাশি মেয়ের মায়ের কাছ থেকে মুচলেখা নেওয়া হয়, যাতে মেয়েটি প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তার বিয়ে না দেওয়া হয়।

প্রথম অভিযান শেষ হওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যেই রাত ১১টার দিকে আরেকটি বাল্যবিবাহের খবর আসে। কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের কুসুমসারা হিন্দুপাড়া গ্রামে এক সনাতন ধর্মাবলম্বী কিশোরীর বিয়ে হচ্ছিল।
অভিযানে গিয়ে ইউএনও দেখেন, মেয়েটির বিয়ে প্রায় সম্পন্ন হয়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন এবং বরের বাবা অমূল্য চন্দ্রকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। একই সঙ্গে মেয়ের বাবার কাছ থেকে মুচলেখা নেওয়া হয়, যাতে মেয়ের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে তাকে আর বিয়ে দেওয়া না হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামিমা আক্তার জাহান বলেন,“ বাল্যবিবাহ একটি গুরুতর অপরাধ। আমরা খবর পাওয়া মাত্রই দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। দুটি বিয়ে বন্ধ করেছি এবং সংশ্লিষ্টদের জরিমানা ও মুচলেখা দিয়ে সতর্ক করেছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের বাল্যবিবাহ হলে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে প্রশাসনের এমন কঠোর পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে স্থানীয়রা। পাশাপাশি, ইউএনওর পক্ষ থেকে সবাইকে আহ্বান জানানো হয়েছে, যদি কোথাও বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটে, তাহলে দ্রুত প্রশাসনকে জানাতে হবে। প্রশাসন বরাবরের মতোই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।