তথ্য অধিসিলেটে দুই দিনব্যাপী তথ্য মেলা উদ্বোকার আইন অন্যতম হাতিয়ার
সিলেট :
‘তথ্যের অধিকার, সুশাসনের হাতিয়ার, তথ্যই শক্তি, দুর্নীতি থেকে মুক্তি ’ শ্লোগানকে সামনে রেখে সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জেলা প্রশাসন এবং টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), সিলেটের উদ্যোগে ২ দিনব্যাপী তথ্য মেলা সোমবার থেকে শুরু হয়েছে।
তথ্য মেলায় তথ্যসেবা প্রদান করছে জেলার ২৫টি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তর। আজ বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ মেলার উদ্বোধন করেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী, এনডিসি।সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার
মো: মাসুদ রানা, উপপরিচালক (উপসচিব) স্থানীয় সরকার সুবর্ণা সরকার, টিআইবি’র সিভিক এনগেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক ফারহানা ফেরদৌস।
তথ্য মেলা উদ্বোধনী পর্বে ‘নতুন বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তথ্য অধিকার আইন বাস্তাবায়নে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী বলেন, সরকারি দপ্তরসমূহকে জবাবদিহি করতে তথ্য অধিকার আইন অন্যতম হাতিয়ার। তথ্য অধিকার আইন একমাত্র আইন যা জনগণকে ক্ষমতায়িত করেছে। তিনি সকল সরকারি বেসরকারি দপ্তরসমূহকে স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ এবং চাহিত তথ্য প্রদানে ইতিবাচক সহযোগিতা করার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, সরকারি দপ্তরের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠায় তথ্য অধিকার আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরী। দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকলকে সক্রিয় হওয়ার আহবান জানান। তিনি বলেন, তথ্য অধিকার আইন -২০০৯ অনুযায়ী তথ্য পাওয়া একজন নাগরিকের অধিকার। তিনি সাধারণ জনগণকে এই আইনের বহুল প্রচার ও প্রয়োগের জন্য আহবান জানান। তিনি সনাকের মাধ্যমে তরুণদের মধ্যে তথ্য আইনের ব্যবহারের বাস্তবায়ন এর জন্য ব্যাপক ভিত্তিক প্রচার প্রচারণা করতে অনুরোধ করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো: মাসুদ রানা বলেন, মহানগর পুলিশের সকল ইউনিটে তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কোন নাগরিক তথ্য চেয়ে না পেলে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবগত করলে তথ্য প্রদানে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, সঠিক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে কাংখিত বৈষম্যমুক্ত ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ে তোলা সম্ভব। তিনি মেলায় আগত সকল দপ্তরসমূহকে তথ্য প্রদানের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন।
সভায় তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ এর উপর আলোচনা রাখেন জেলা তথ্য অফিসের উপ-পরিচালক সালাহ উদ্দিন আহমেদ।সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক প্রণব কান্তি দেবের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন, সিলেট জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহীন, সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো: আনোয়ার উজ জামান, সনাক সিলেটের সভাপতি সৈয়দা শিরীনা আক্তার, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ গোলজার আহমদ, ব্লাস্ট সিলেটের কো-অর্ডিনেটর এডভোকেট ইরফানুজ্জামান চৌধুরী,সিলেট সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার খোশনুর রুবাইয়াত,শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের আরএমও ডা: মিজানুর রহমান প্রমুখ।
তথ্য মেলার উদ্বোধনী আলোচনা পরবর্তীতে সিভিল সার্জন অফিসের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা: জন্মেজয় দত্ত এবং বিভাগীয় পাসপোর্টঅফিসের সহকারী পরিচালক এ কে এম মোতাহের হোসেন গণশুনানীতে অংশগ্রহণ এর মাধ্যমে সাধারণ জনগণের নানাবিধ প্রশ্নোত্তর প্রদান করেন।মেলায় সনাক-এর ইয়েস গ্রুপ পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ তথ্য ও পরামর্শ ডেস্ক থেকে দর্শনার্থীদেরকে সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে তথ্যের জন্য আবেদন করার কৌশল এবং তথ্য প্রাপ্তিতে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
তথ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী অফিসসমূহ-পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসন,কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, সিটি কর্পোরেশন, বিআরটিএ,জেলা তথ্য অফিস, দুদক, বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস,সদও উপজেলা ভূমি অফিস, সিলেট মহানগর রাজস্ব সার্কেল, জেলা রেজিস্টারের কার্যালয়, সমাজসেবা কার্যালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, সমবায় কার্যালয়, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, মৎস্য কর্মকর্তার দপ্তর, উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল, জেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ইসলামিক ফাউন্ডেশন,বিভাগীয় কার্যালয়, জেলা পরিষদ ডিজিটাল সেন্টার, ব্র্যাক,বেলা, আইডিই এবং সনাক সিলেট।অতিথিবৃন্দ মেলার স্টল পরিদর্শন করেন।।