ইবি প্রতিনিধিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদভূক্ত আল ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরিক্ষা ধর্মতত্ত্ব অনুষদের মাধ্যমে নেয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং আইন অনুষদের মাধ্যমেই শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর দাবিতে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১ লা মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের নীচে এই অবস্থান কর্মসূচী পালন করে তারা। এসময় বিভাগের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আল ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগ দীর্ঘদিন ধরেই গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তিপরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে আইন অনুষদের অন্তর্ভুক্ত বিভাগ হিসেবে শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে আসছিলো। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা না করেই রোজার ছুটি হওয়ার আগের শেষ কর্মদিবসে বিভাগের শিক্ষকরা মিটিং করে ধর্মতত্ত্ব অনুষদের মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়৷ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসলে আজ সকালে শিক্ষার্থীরা বিভাগীয় সভাপতির সাথে দেখা করে সিদ্ধান্তটি বাতিলের দাবি জানায়। কিন্তু বিভাগ থেকে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হবেনা বলে জানালে শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবনের সামনে এসে অবস্থান কর্মসূচী আরম্ভ করে।
শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন যাবত বিভাগের নাম পরিবর্তন এবং সিলেবাস পরিমার্জন করার দাবী জানালেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়নি বিভাগের শিক্ষকরা। ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের ৩৪০০ নাম্বারের আইন কোর্স পড়ানোর কথা থাকলেও আল ফিকহ বিভাগে পড়ানো হয় ২২০০ নাম্বারের। এছাড়া ১৩৬ ক্রেডিট পড়ানোর কথা থাকলেও তা পড়ানো হয় না। এছাড়া তীব্র সেশনজটে ভুগছেন শিক্ষার্থীরা। এসব সমস্যা নিয়ে বারবার বিভাগে দাবি জানানো হলেও কোন উন্নতি হয়নি।
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, বার কাউন্সিল চাইলে যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের যেখানেই আইন পড়ানো হয় তার মান তদারকি করতে পারে। তাই ইবির আল ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগ ধর্মতত্ত্ব অনুষদভুক্ত করলে বার কাউন্সিল চাইলে কোর্টে সনদ গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এজন্য আমারা ধর্মতত্ত্ব অনুষদের মাধ্যমে ভর্তি পদ্ধতির বিরুদ্ধে। আমরা চাই বিগত বছরের মতো গুচ্ছের মাধ্যমে এই বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হোক এবং সিলেবাস সংস্কার করে এলএলবি ডিগ্রির উপযোগী সিলেবাস প্রণয়ন করা হোক।
কর্মসূচীর একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান এবং ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম। তারা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে দাবীদাওয়া শুনে আগেই প্রশাসনের কাছে না এসে বিভাগে সমাধানের পরামর্শ দেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বিভাগ থেকে সহযোগীতা করা হবে না বলে জানানো হয়েছে উল্লেখ করে প্রশাসনের সাথে সাক্ষাতের আবেদন দেয়। পরবর্তীতে উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলমের সাথে সাক্ষাৎ করে শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শুনে ট্রেজারার তাদের আগামীকাল ছাত্র উপদেষ্টার মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর একটি লিখিত আবেদন দিতে বলেন এবং উপাচার্য আসলে তার সাথে সরাসরি আলোচনা করার পরামর্শ দেন।