ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বাণিজ্যকভাবে আদা চাষ
ফরিদপুর স্টাফ রিপোর্টার :
ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নে বানিজ্যিক ভাবে আদা চাষ হচ্ছে। স্বল্প পুজি বিনিয়োগ করে অল্প সময়ে উচ্চমূল্যের মসলা ফসল আদা চাষে বস্তা পদ্ধতিতে ঝুঁকছেন তরুণ উদ্যোক্তারা।
জানা গেছে, জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নে আলগি পাড়া এলাকার আ: হাচান খান ২০ শতাংশ জমিতে বস্তায় ৩ হাজার ২ শত এবং মাটিতে ২ হাজার ৬ শত পিস আদা চাষ করেছেন। এছাড়া একই ইউনিয়নে লংকার চড় গ্রামের সুদীপ্ত কুমার ৭০০ পিস আদা চাষ করেছেন।
পরিমাণ মতো মাটি ও গোবর সার মিশ্রণ করে সিমেন্ট আর বালির বস্তায় আদা চাষের খরচ মাত্র ৭০-৮০ টাকা। একটি বস্তায় ১ থেকে দেড় কেজি আদা ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন তিনি।
বোয়ালমারী কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যাগিং বা বস্তায় আদা চাষ উৎসাহিত করা হচ্ছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, চাষযোগ্য পতিত জমি বা বসতবাড়ির আশপাশে, ফলবাগান ও বিল্ডিংয়ের ছাদে জিও ব্যাগে আদা চাষ করে উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে আমদানি ব্যয় কমানো সম্ভব। জিও ব্যাগে আদা চাষ করে অনাবাদি জমিকে চাষের আওতায় আনা হয়েছে।
জিও ব্যাগ পুনর্ব্যবহারযোগ্য, পরিবেশবান্ধব, তাপ প্রতিরোধী, জলরোধী এবং ব্যবহারের জন্য টেকসই। এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করলে কন্দ পচা রোগ হয় না। যদি রোগ দেখা যায় তখন গাছসহ বস্তা সরিয়ে ফেলা হয়। ফলে কন্দ পচা রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে না। এ পদ্ধতিতে উৎপাদন খরচ তুলনামূলক কম
লংকার চড় গ্রামের সুদীপ্ত কুমার জানান, আমি আগে কখনো বস্তায় আদা চাষ করিনি। এবার বস্তায় চাষ করছি। তেমন কোনো রোগবালাই দেখা দেয়নি।মনে হচ্ছে আদা চাষ করে লাভবান হবো।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপ সহকারী কর্মকর্তা মো: ইমরান হোসেন জানান, ফল বাগানের ছায়াযুক্ত জায়গাকে আদা চাষের জন্য বেছে নেয়ার পাশাপাশি চাষাবাদ সম্প্রসারণে কৃষকদের সার বীজ সহ সব ধরনের কারিগরি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী কৃষি অফিসার এস এম মো: রাশেদুল হাচান জানান, এপ্রিল-মে মাসে আদা লাগাতে হয়। তবে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ আদা লাগানোর উপযুক্ত সময়। বস্তায় আদা লাগানোর পূর্বে প্রতি বস্তায় তৈরি মিশ্রন এমন ভাবে ভরাট করতে হবে যাতে বস্তার উপরের দিকে ১-২ ইঞ্চি ফাঁকা থাকে। প্রতি বস্তায় ৪৫-৫০ গ্রামের একটি বীজ মাটির ভিতরে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি গভীরে লাগাতে হবে। বীজ লাগানোর পর মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এবং তা সঠিক পরিচর্যা পেলে কৃষক লাভবান হবে। আমার প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে যেই প্রশিক্ষণ দিচ্ছি যা কৃষকরা প্রয়োগ করলে এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে বেশ ভালো প্রভাব পড়বে বলে আশা করা যায়।